শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

মানিকগঞ্জে তরুণ প্রার্থীর ছড়াছড়ি

মো. কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জে তরুণ প্রার্থীর ছড়াছড়ি

একাদশ নির্বাচনের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে ঢাকার অদূরের জেলা মানিকগঞ্জেও। আওয়ামী লীগ- বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে কমবেশি তৎপরতার পাশাপাশি  কেন্দ্রীয় সংকেত পাওয়ার জন্য লবিং-তদবিরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কার্যত, সংসদীয় তিনটি ১৬৮, ১৬৯ ও ১৭০ আসনে লড়াই হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে। প্রধান দুই দলেই রয়েছে একাধিক প্রার্থীও। মনোনয়নযুদ্ধে লড়বেন একই দলের একাধিক নেতা। এরই মধ্যে অনেকেই পোস্টার, ব্যানার সাঁটিয়ে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে জানান দিতে শুরু করেছেন। গত রমজানেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইফতার পার্টি দিয়ে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের কাছে টানার চেষ্টা করেছেন। মানিকগঞ্জ জেলায় তিনটি নির্বাচনী এলাকা রয়েছে। এর মধ্যে  তিনটি উপজেলা নিয়ে মানিকগঞ্জ-১ আসন গঠিত। উপজেলাগুলো হলো ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়। মানিকগঞ্জ-২ আসনটি  সিংগাইর ও হরিরামপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ-৩ সদর ও সাটুরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়। এলাকার উন্নয়নে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী। জেলা যুব উন্নয়ন কমপ্লেক্স, জাফরগঞ্জ নদী শাসন প্রকল্প, প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্টসহ বেশকিছু উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে তার হাত ধরেই। এ ছাড়াও এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আনোয়ারুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিপি আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম জাহিদ ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার সুভাষ চন্দ্র সরকার। এর মধ্যে আনোয়ারুল হক ও এস এম জাহিদ এলাকায় ব্যাপকভাবে তৎপর। তারা বলছেন, এবার প্রার্থী বদল হতে পারে। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য একক প্রার্থী হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএপির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর। দলের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিজ এলাকার নেতা-কর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছেন। সংগঠনকে গতিশীল করতে ও নেতা-কর্মীদের হামলা-মামলায় আর্থিকভাবেও সহায়তা প্রদান করছেন বিএনপির এই নেতা। তার সংসদীয় এলাকায় ৯টি ইউনিটেই সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলছে। জিন্নাহ কবীরের বিরুদ্ধে একাধিক রাজনৈতিক মামলাও রয়েছে। এ ছাড়াও বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে জেলা বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. খোন্দকার আকবর হোসেন বাবলু ও জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আবদুল হামিদ ডাবলুও নিজেদের মতো করে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হকও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। জাতীয় পার্টি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। জাতীয়  সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা কমিটির সভাপতি ইকবাল হোসেন খানও এ আসনে প্রার্থী। মানিকগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী

মমতাজ বেগম। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের সম্ভাব্য প্রার্থী। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয কমিটির সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সাবেক ফুটবলার দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল ও সিংগাইর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান হান্নান। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম খান শান্ত। এ ছাড়া সিংগাইর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবিদুল রহমান নোমান ও হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল হুদা চৌধুরী শাতিল ও দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী  জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবদুল মান্নান ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু। মানিকগঞ্জ-৩ জেলা সদরটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য স্বাস্থ্য ও  পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের সম্ভাব্য প্রার্থী। এফবিসিসিআইয়ের তিন বারের নির্বাচিত পরিচালক ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটো এবং আমেরিকা প্রবাসী ডা. রফিকুল ইসলামও দলীয় প্রতীক পেতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জেলা বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। তিনি এলাকায় ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। এ ছাড়াও আরও দুজন দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা হলেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান আতা ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জামিলুর রশীদ খান। জাতীয় পার্টি থেকে এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জহিরুল আলম রুবেল ও জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান সাঈদ। এ ছাড়াও জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল হোসেন খান, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আজহারুল ইসলাম আরজু, গণফোরাম নেতা মফিজুল ইসলাম খান কামাল এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে জানা যায়।

আগামীকাল : মুন্সীগঞ্জের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা

সর্বশেষ খবর