রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

পুলিশের বিরুদ্ধে চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা মহানগরীর খালিশপুর এলাকায় শাহজালাল ওরফে শাহ জীবন (৩০) নামে এক যুবকের দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনার জন্য জনতাকে দায়ী করলেও, পরিবারের অভিযোগ খালিশপুর থানা পুলিশ শাহজালালের চোখ উপড়ে দিয়েছে।

শাহজালাল খালিশপুর নয়াবাটি রেলবস্তি এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চোখে অপারেশন করা হয়েছে। পরে চিকিৎসক অধ্যাপক ফরিদুল হাসান জানিয়েছেন, তার চোখে আলো ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম। ফিরে পেলেও তা হবে খুবই ক্ষীণ।

ওই যুবকের চোখ উৎপাটনের ঘটনায় তার পরিবার ও স্থানীয়রা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। এক লাখ টাকা না পেয়ে খুলনা খালিশপুর থানা পুলিশ শাহজালালের চোখ উপড়ে দিয়েছে বলে তারা দাবি করছেন। পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, গত ১৮ জুলাই রাতে খুলনার নয়াবাটির রেলবস্তি এলাকায় ‘ছিনতাইকারী’ হিসেবে মারধর করে জনতা শাহজালালের চোখ উপড়ে ফেলে।

শাহজালালের বাবা জাকির হোসেনের দাবি, গত মঙ্গলবার রাতে খালিশপুর থানার এএসআই মো. রাসেল হোসেন শাহজালালকে আটক করে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টার দিকে থানায় ছেলের খোঁজ নিতে গেলে পাওয়া যায়নি। পরে সকালে তিনি জানতে পারেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি পুলিশ পরিকল্পিতভাবে করেছে বলে তিনি মুঠোফোনে জানান।

শাহজালালের শাশুড়ি প্লাটিনাম জুট মিলের বদলি শ্রমিক রানী বেগম জানান, রাতে জামাইকে ছিনতাইকারী হিসেবে আটক করার খবর পেয়ে মেয়ে রাহেলাসহ তিনি থানায় যান। সেখানে ১১টার দিকে তারা থানাহাজতে শাহজালালকে দেখেন। তখন তার পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। কিন্তু চোখমুখে কোনো সমস্যা ছিল না। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ জামাইকে নিয়ে বের হয়ে যায়। এরপর রাত ৩টার দিকে খবর পেয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জামাইকে মেঝেতে শোয়া ও চোখ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান।

খালিশপুর থানার ওসি মো. নাসিম খান এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এখানে পুলিশের কোনো কারসাজি নেই। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খালিশপুরের পুরাতন যশোর রোডের বাসিন্দা শুকুর আহমেদের মেয়ে ও স্ত্রী শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেল যোগে দুজন গিয়ে শুকুর আহমেদের মেয়ে সোমা আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। সঙ্গে সঙ্গে সোমা চিৎকার করলে স্থানীয় জনতা ছিনতাইকারী শাহজালালকে ধরে ফেলে এবং সঙ্গে থাকা শুভ মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। শাহজালালকে ধরার পর স্থানীয় জনতা তাকে পিটুনি দিয়ে দুই চোখ তুলে নেয়।’

হাসপাতালে থাকা শাহজালালের স্ত্রী রাহেলা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘শাহজালালকে বিশ্বরোড এলাকায় নিয়ে পুলিশ হাত-পা বেঁধে চোখ উপড়ে দেয়।’

সর্বশেষ খবর