সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

যাদের টাকায় সংসার চলে তাদের সেবা করুন

প্রতিদিন ডেস্ক

যাদের টাকায় সংসার চলে তাদের সেবা করুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সব সরকারি কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন। যাদের অর্থে আজকে আমরা চলছি তাদের যেন কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। যারা অন্যায় করবে তাদের কঠোর হস্তে দমন করুন। কিন্তু সাবধান একটা নিরপরাধ লোকের ওপর যেন অত্যাচার না হয়।’ তিনি গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও জনপ্রশাসন পদক-২০১৭ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। খবর বাসসের।

জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যে মানুষগুলোর অর্থ দিয়েই সবকিছু চলছে তাদের কল্যাণ করে যেতে হবে। জাতির পিতা নির্দেশ দিয়ে গেছেন এবং তার প্রতিটি কথাই দেশের কল্যাণের জন্য একান্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে জনকল্যাণে নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু রুটিন দায়িত্ব পালনে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে আরও কী কাজ করলে মানুষের কল্যাণ হয়, সেটা চিন্তা করে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি চাকরি যে, একটা রুটিন চাকরি, আসলাম, বেতন নিলাম, চলে গেলাম সেটা নয়, নিজের ভেতরে উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগাতে হবে। নিজেই নিজেকে আবিষ্কার করতে হবে। যেখানে যে দায়িত্বপ্রাপ্ত তাকে সেখানে ভাবতে হবে, এটা আমার নিজের দায়িত্ব, কারণ এই দেশটা আমার। দেশের মানুষগুলো আমার। কাজেই দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘খুলনার জেলা প্রশাসক একটা উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেখানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং আমাদের পুলিশ প্রশাসন এক দিনের বেতন দিয়ে একটি ফান্ড তৈরি করেছেন ভিক্ষুক মুক্ত করার জন্য। এই ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। বিষয়টি আমার খুবই ভালো লেগেছে। একটা উদ্ভাবনী কাজ তারা করেছেন। আমি জানতে চাইলাম, এটা তারা করলেন কেন? উত্তর পেয়েছি, আপনারা আমাদের এত বেতন বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে আমাদেরও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে, যা থেকে ভাবলাম একটু সেবা করি।’

শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব : প্রধানমন্ত্রী এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের গড়ে তোলার সুযোগ পায় সেজন্য সরকার শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ বছর এইচএসসির রেজাল্ট একটু খারাপ হলেও আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তুলে গুণগত মানের দিকে সর্্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রয়োগ করেছি। সব বিষয়ের প্রতি বিশেষ করে উত্তরপত্র মূল্যায়নে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়ে উঠতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণকালে এ কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ১০টি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানকে সঙ্গে করে এই ফলাফল হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী পাস-ফেল নিয়ে না ভেবে শিক্ষার মান বাড়াতে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে এবং এই বয়সে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সঠিক গাইডলাইন দেওয়া।’ ছেলেমেয়েরা যেন মাদকাসক্তি ও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর