বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

নিখোঁজের পর মিলল শিশুর লাশ, পাওয়া যায়নি একটি চোখ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুর সদর উপজেলার আঙ্গারীয়া ইউনিয়নের নতুনহাট এলাকার একটি ফসলি জমি থেকে মাদ্রাসা ছাত্র ওসমান গনি (১২) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটির  বাম চোখ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক। শ্বাসনালী ও রক্তনালী কাটা অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। ওসমান গনি উত্তর ভাসানচর গ্রামের ইদ্রিস মাদবরের ছেলে। পশ্চিম ভাসানচর নোমানিয়া কওমিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার লাশ  দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় গ্রামবাসী।  নিহতের পরিবার, পালং থানা ও গ্রামবাসী জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার উত্তর ভাসানচর গ্রামের গরিব কৃষক ইদ্রিস মাতুব্বরের ছেলে ওসমান গনি স্থানীয় পশ্চিম ভাসানচর নোমানিয়া কওমিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। সে মাদ্রাসার আবাসিক ছাত্র ছিল। প্রতিদিন মাদ্রাসা থেকে দুপুরের খাবার খেতে বাড়ি যেত। আবার রাতের খাবার নিয়ে মাদ্রাসায় ফিরত। রোববার বাড়ি থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে রাতের খাবার সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসায় যায়। সেখানে খাবারের টিফিন ক্যারিয়ার রেখে আসরের নামাজ আদায় করে। নামাজ শেষে মাদ্রাসা থেকে পাশের নতুনহাট বাজারে যাওয়ার জন্য বের হয়। এরপর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিম ভাসানচর গ্রামে কীর্তিনাশা নদীর তীরের একটি আখ খেতে লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকার মানুষ। পুলিশ রাত সাড়ে ৮টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আকরাম এলাহি বলেন, ওই শিশুর শ্বাসনালী ও রক্তনালী কাটা ছিল। গলায় তিনটি স্থানে ফুটো করা ছিল। তার বাম চোখটি ছিল না। ওই মাদ্রাসার সহকারী অধ্যক্ষ আবদুর রহমান বলেন, বিকালে মাদ্রাসার বাচ্চারা মাঠে খেলা করছিল। ওসমান খাবারের টিফিন ক্যারিয়ার রেখে নামাজ আদায় করে মাদ্রাসা থেকে বের হয়। রাতে যখন সে ফিরে না আসে তখন আমরা খুঁজতে থাকি। তার বাড়িতেও খুঁজে না পেয়ে গ্রামে খুঁজতে থাকি। পরের দিনও খুঁজি। কিন্তু সন্ধ্যায় খবর পাই তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার একটি চোখ পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা এলাকার মানুষ, শিক্ষক ও ছাত্ররা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। ওসমানের বাবা ইদ্রিস মাতুব্বর বলেন, আমার ছেলেটি অনেক নিরীহ ছিল। কোরানে হাফেজ বানানোর জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলাম। সে ১২ পারা কোরান মুখস্থ করেছিল। আমাদের কোনো শক্র নেই, কে কেন আমার ছেলেটিকে মেরে ফেলল? হত্যাকারীদের বিচার চাই। শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা খোঁজা হচ্ছে। ওই ছাত্রের ভাই তাইজুল মাতুব্বর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সর্বশেষ খবর