বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

এএসপি হত্যার দুই আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

কুষ্টিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে জাকির আহমেদ ও মিন্টু মিয়া নামে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোরে রূপনগর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড অফিসের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিভর্তি একটি ম্যাগাজিন, লোহার রড, চাকু ও একটি সাদা প্রাইভেট কার উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, নিহত দুই যুবক হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মিজানুর রহমান তালুকদার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোমিনুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়ের পাশে ছিনতাইকারী দল জড় হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ছিনতাইকারীরা গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এএসপি মিজান হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার শাহ আলম ওরফে বুড্ডা রূপনগরে নিহত ওই দুই যুবককে ছিনতাইকারী দলের সদস্য এবং এএসপি মিজান হত্যার সঙ্গে তারা জড়িত বলে চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে জাকির গাড়িচালক। ২১ জুন সকালে রাজধানীর রূপনগর বেড়িবাঁধসংলগ্ন বিরুলিয়া ব্রিজের কাছে রাস্তার পাশে গলায় কাপড় পেঁচানো অবস্থায় এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারের লাশ পাওয়া যায়। তিনি হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর অঞ্চলের সাভার সার্কেলের দায়িত্বে ছিলেন। এ ঘটনায় ২২ জুলাই রাতে টঙ্গী থেকে শাহ আলম ওরফে বুড্ডা নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এএসপি মিজান হত্যার পেছনে ছিল ছিনতাইয়ের ঘটনা। কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুইজন নিহত : কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি নিহতদের একজন ডাকাত এবং অন্যজন সন্ত্রাসী। ভেড়ামারা থানার ওসি নুর হোসেন খন্দকার জানান, গতকাল রাতে তাদের কাছে খবর আসে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কে ভেড়ামারা উপজেলার দশমাইল নামক স্থানে একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ খবরের ভিত্তিতে রাত সাড়ে তিনটার দিকে টহল পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এসময় ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে এক ডাকাত গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পরে পুলিশ জানতে পারে নিহত ব্যক্তির নাম হাসানুজ্জামান ওরফে লালন (৩৫)। তিনি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মানিকদিয়া গ্রামের আলিম উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় আরেক ডাকাত আহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে ওসি জানান। ওসি আরও দাবি করেন যে, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি সার্টার গান, একটি গুলি, একটা গাছ কাটা করাত ও দুটি রামদাসহ গাছের গুঁড়ি উদ্ধার করেছে। এদিকে নিহত লালনের স্ত্রী কানিজ ফাতিমা দাবি করেন, তার স্বামী আগে একটু খারাপ প্রকৃতির থাকলেও বর্তমানে তিনি ভালো হয়ে গিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে একটি ছিনতাই মামলা ছিল। ওই মামলায় তিনি মঙ্গলবার কুষ্টিয়া আদালতে হাজিরা দিতে এসে নিখোঁজ হন। তিনি বলেন, লালন ভালো হতে চেয়েছিল, কিন্তু তাকে সে সুযোগ দেওয়া হলো না। এদিকে কুষ্টিয়া শহরে পুলিশের সঙ্গে আরেক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় সোবহান আলী (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে বাড়াদী গোরস্থানের কাছে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোবহান কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত. নুর উদ্দিনের ছেলে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিনের দাবি, নিহত সোবহান আলী একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাকে আটকের পর তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক গভীর রাতে বাড়াদি গোরস্থান এলাকায় তাকে সঙ্গে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশ। এসময় আগ থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুুলিশ তাদের উপর পাল্টা গুলি চালালে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে সোবহান আলীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটা বিদেশি পিস্তল, একটা দেশীয় বন্ধুক, এক রাউন্ড গুলি ও ৩ রাউন্ড গুলির খোসা, একটা চাইনিজ কুড়াল, একটা হাসুয়া, উদ্ধার করে সোবহানের নামে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও কুমারখালী থানায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে ৮টি মামলা রয়েছে বলে ওসি দাবি করেন। তবে নিহতের স্ত্রী সালমা খাতুন জানান, তারা বেশ কিছুদিন ধরে নাটোরের বনপাড়ায় বসবাস করছিলেন। সেখানে সোবহান মাছের ব্যবসা করতেন। গত ১০ জুলাই তিনি বনপাড়া বাজারের একটি দোকানে ক্যারাম খেলছিলেন। এসময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। এরপর তারা অনেক জায়গায় খোঁজ করেও সোবহানের সন্ধান পাননি।

সর্বশেষ খবর