শিরোনাম
সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

এরশাদের দিল্লি সফর নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বসিত

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর মধ্যে এখন শুধু দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দিল্লি সফর নিয়ে আলোচনা। এ নিয়ে অনেক দিন পর জাতীয় পার্টি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। বিমানবন্দরে দলীয় চেয়ারম্যানের গণসংবর্ধনা ছিল ঢাকায় একটি শোডাউন। দলীয় নেতা-কর্মীরা মনে করেন, চেয়ারম্যানের দিল্লি সফরের পরই নির্বাচনী মাঠে দলটির যাত্রা হয়েছে।

জানতে চাইলে পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এইচ এম এরশাদের পাঁচ দিনের ভারত সফরকালে সেখানে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীর সঙ্গে মতবিনিময়ে বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাপার প্রতি তাদের পরামর্শ— দলকে সুসংগঠিত করে নির্বাচনে বিজয়লাভের চেষ্টা করুন।’ ঢাকায় এরশাদকে দেওয়া সংবর্ধনাটি ‘অভূতপূর্ব আয়োজন’ ছিল উল্লেখ করে জাপা মহাসচিব বলেন, ‘এর ফলে সৃষ্ট যানজট ও নগরবাসীর দুর্ভোগের জন্য আমরা দুঃখিত।’ তিনি বলেন, ‘এ সফরের পর থেকেই নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। ২৬ বছর পর আবার নতুন করে উদ্দীপনার সঙ্গে নতুন প্রত্যাশা নিয়ে পার্টি যাত্রা করেছে।’ রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘পার্টি চেয়ারম্যান বিমানবন্দরে নেমেই ৩০০ আসনে নির্বাচনের কথা বলেছেন। ২৯ জুলাই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জোটের যৌথ সভা করা হয়। সভায় নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা ও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।’

 ১৯ জুলাই দিল্লির উদ্দেশে রওনা হওয়ার পরই নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। পাঁচ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরলে ২৩ জুলাই বিমানবন্দরে হাজার হাজার নেতা-কর্মী পার্টি চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা দেন। প্রতিদিনই কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা আসছেন। উপস্থিত সবার মুখে একই আলোচনা— এরশাদের ভারত সফর। প্রতিটি অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের কার্যালয়ে বসছেন এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলে বার্তা পাঠাচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে দলের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি ও পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘এরশাদের দিল্লি সফর আমাদের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা এ সফরকে জাতীয় রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করেই সংবর্ধনা দিয়েছেন।’ সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক বাবলা আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের একটি ভূমিকা আমাদের নির্বাচনে থাকে বলে দেশের সাধারণ মানুষের বিশ্বাস। এ সফরের মধ্য দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ঘটতে পারে।’ জানা যায়, এর আগে ব্যক্তিগত সফরে ভুটান গিয়েছিলেন এইচ এম এরশাদ। সেখান থেকে ফেরার পর নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। বর্তমান সরকারের শাসনামলের সাড়ে তিন বছরে এরশাদ বহুবার বিদেশ গেছেন। দেশে ফেরার পর কোনোবারই তাকে বিমানবন্দরে সংবর্ধনা দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় অর্ধশতাধিক দল নিয়ে এরশাদের নির্বাচনী জোট ঘোষণা, ইসির রোডম্যাপ প্রকাশের পর এরশাদের দিল্লি সফর, দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উৎসব ও বিমানবন্দরে ব্যাপক সংবর্ধনার আয়োজন দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই প্রশ্ন করছেন দিল্লি থেকে এরশাদ জাপা নেতা-কর্মীদের জন্য কি কোনো শুভবার্তা নিয়ে এসেছেন? নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, বিজেপি সরকারের ওপর ভরসা করেই এরশাদ নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ গড়তে চান। এজন্যই এবারের দিল্লি সফর নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে দেশে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত— এটা দিল্লিকে বোঝানোর জন্য ৫৮টি দলের সমন্বয়ে সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক জোট গঠন করেন এরশাদ।

সর্বশেষ খবর