সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

সুন্দরবনের ৫২ শতাংশ এলাকা সংরক্ষিত

উদ্দেশ্য বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি

মোস্তফা কাজল

সুন্দরবনের ৫২ শতাংশ এলাকা সংরক্ষিত

রয়েল বেঙ্গল টাইগার (বাঘ)’র বংশ বৃদ্ধি ও বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্র নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সুন্দরবনের ৫২ শতাংশ এলাকাকে অভয়ারণ্য (সংরক্ষিত) ঘোষণা করা হয়েছে। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ইসতিয়াক আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে এ অভয়ারণ্যের পরিমাণ ছিল ২৩ শতাংশ। সুন্দরবনের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণের ১২টি কম্পার্টমেন্ট নতুনভাবে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে নতুনভাবে ঘোষিত অভয়ারণ্য এলাকার আয়তন  ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৫০ দশমিক ৫৮৪ হেক্টর। এর মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের ২২টি কম্পার্টমেন্টের ৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর অভয়ারণ্যের আওতাভুক্ত হলো। এর আগে ১০টি কম্পার্টমেন্ট নিয়ে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকার আয়তন ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৯ দশমিক ৪৯৬ হেক্টর। সুন্দরবনের মোট আয়তন ৬ হাজার ১৭ কিলোমিটার।  পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় (বন শাখা-২)-এর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ ১৯৭৩ এবং বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধন) আইন ১৯৭৪’র ২৩ (১) (২) ধারার ক্ষমতাবলে ১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সুন্দরবনের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণের ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৯৯ দশমিক ৪৯৬ হেক্টর এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে ওই অভয়ারণ্য এলাকা সমপ্রসারণের প্রয়োজন হওয়ায় বন অধিদফতরের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’র ধারা ১৩’র ক্ষমতাবলে আগের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অধিকতর সংশোধনক্রমে সরকার সংরক্ষিত এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে বন সংরক্ষক (খুলনা অঞ্চল) এবং সুন্দরবনের বাঘ মনিটরিং সার্ভে প্রকল্পের পরিচালক আমির হোসাইন চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য নতুন অভয়ারণ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষা হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাঘের পাশাপাশি হরিণের সংখ্যাও বেড়ে যাবে। হরিণ শিকারের লোভে বাঘের আনাগোনা বেড়ে যাবে। এসব প্রজনন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি বন বিভাগের মূল দায়িত্ব বর্ধিত এলাকার যথাযথ পরিচর্যা করে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বিচরণ ক্ষেত্র নিশ্চিত করা। এতদিন সুন্দরবনের ২৩ শতাংশ এলাকা অভয়ারণ্য ছিল। নতুন আদেশের ফলে ৫২ শতাংশ অভয়ারণ্য হলো। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশিরুল বলেন, অভয়ারণ্য এলাকায় বাঘসহ অন্যান্য প্রাণীর নিরাপদ বিচরণ নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ এলাকায় সব ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকার বনজ সম্পদ আহরণকারী, নির্ভরশীল জনগোষ্ঠী এবং বন সংলগ্ন অধিবাসীদের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হবে।  বর্তমানে এ বনে ২০১৫ সালের জরিপ অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ১০৬। অথচ ২০০৪ সালে ছিল ৪৪০।

সর্বশেষ খবর