বুধবার, ২ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে বাপ-বেটা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সম্মেলনের এক বছরের বেশি সময় পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। ১১১ সদস্যের এ কমিটিতে এবার বাপ-ছেলে দুজনই ঠাঁই পেয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পদে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে মহানগর যুবলীগের সভাপতি হয়েছেন রমজান আলী। আর কমিটিতে তার ছেলে রায়হানুর রহমান রোমেলকে করা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক। রোমেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী। ছাত্রাবস্থায় যুবলীগে পদ পাওয়ার বিষয়টি নিয়েও সমালোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলে। এক যুগেরও  বেশি সময় ধরে সভাপতি থাকার পর গত বছর ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফের সভাপতি নির্বাচিত হন রমজান আলী। তখনই যুবলীগে দ্বিতীয়বারের মতো তার সভাপতি পদে থাকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরপর সম্প্রতি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নিজের ছেলেকেও পদে বসালে সেই ক্ষোভের চিতায় ঘি ঢালা হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর তৃণমূল যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে তারা কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতাদের কাছে অভিযোগও করেছেন।

রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাচ্চু জানান, ৯ জুলাই রাজশাহী মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সম্পাদক স্বাক্ষরিত ১১১ সদস্যের ওই কমিটিতে সহ-সভাপতি আছেন ৯ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক আছেন পাঁচজন, সহ-সাধারণ সম্পাদক আছেন তিনজন। তিনি জানান, সাংগঠনিক সম্পাদক পাঁচজনের মধ্যে একজন হলেন সভাপতি রমজান আলীর ছেলে রায়হানুর রহমান রোমেল। তবে সংগঠনের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিমত সৃষ্টি হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাচ্চু কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

রাজশাহী মহানগর যুবলীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাপ-ছেলে যুবলীগের নেতা এই প্রথম দেখলাম। বাপ সংগঠনটাকে নিজের মতো ব্যবহার করেন। তাই তার ছেলেকে একই সংগঠনের পদে বসিয়েছেন। সামনের কাউন্সিলে হয়তো বাপ আসতে পারবেন না জেনে এখন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ছেলেকে যুবলীগের দায়িত্ব দিতে চাইছেন। অথচ ছাত্রাবস্থায় যুবলীগের পদ পাওয়ার বিষয়টিও বিরল হয়ে থাকল সংগঠনে।’

তবে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী এবং তার ছেলে সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হানুর রহমান রোমেল ভারতে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। বাপ-বেটা যুবলীগের নেতা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের দফতর সম্পাদক আনিসুর রহমান বলেন, ‘যারা পদে থাকেন, আমরা তাদের ওপরই দায়িত্ব দিই পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতাদের নাম পাঠাতে। সেখানে তারাই যদি এ ধরনের কাজ করে থাকে, তাহলে দায়ভার তাদেরই। তবে বাপ-বেটা যুবলীগের পদে থাকতে পারবে না সংগঠনের গঠনতন্ত্রে এমন কোনো নিয়ম নেই।’ এর আগে ২০০৪ সালের ১৮ এপ্রিল মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে রমজান আলী সভাপতি ও মোশারফ হোসেন বাচ্চু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৬ সালের ৫ মার্চ রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনের আগে সভাপতি পদে দ্বিতীয় দফায় কোনো প্রার্থী না থাকায় রমজান আলীকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে দুজন প্রার্থী থাকায় ভোটের মাধ্যমে আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বাচ্চু নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ খবর