শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

তুফানের স্ত্রী ও শাশুড়িকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত তুফান সরকারের স্ত্রী আশা সরকার ও শাশুড়ি রুমি বেগমকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশকে অনুমতি দিয়েছে আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তৃতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল বগুড়ার অতিরিক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামসুন্দর রায়ের আদালতে ওই দুজনকে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আবেদন নামঞ্জুর করে সাত দিনের মধ্যে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। এর আগে বুধবার একই আদালত জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণের মামলায় তুফান সরকার ও তার সহযোগী মুন্নার দুই দিন করে এবং তুফানের স্ত্রী ও শাশুড়ির এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিল। অন্যদিকে কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি এখনো  রিমান্ডে রয়েছেন। তুফান সরকারের বড় ভাই বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা আবদুল মতিন সরকারকে পুলিশ খুঁজছে। ঘটনার পর থেকে মতিন সরকার গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। তুফান সরকার ও মতিন সরকারের সহযোগীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তুফান ও মতিনকে যারা শুভেচ্ছা দিয়ে শহরের মোড়ে মোড়ে ব্যানার ঝুলিয়েছিলেন, সেই ব্যানার তারা রাতের আঁধারে খুলে ফেলেছেন। বগুড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে কিছু দিন আগে ব্যানার দেখা গেলেও এখন আর তা দেখা যাচ্ছে না। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে তুফান ও মতিনপ্রীতি থেকে সরে আসছেন অনেক নেতা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ জানান, তুফানের স্ত্রী ও শাশুড়িকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে তুফান সরকার ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বগুড়ায় মানবাধিকার কমিশন, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও স্কুল শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে গতকাল মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। দুপুরে বগুড়া ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন করে। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাফর, সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহাদৎ হোসেন, শিক্ষিকা সুলতানা শাহীন আকতার এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেফতাহুল জান্নাত প্রীতি, তাসনিম জাহান স্পন্দনা ও মিশু খাতুন বক্তব্য দেন। তারা ভিকটিমের পরিবারকে নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি তুফান সরকার ও তার সহযোগীদের বিচারের মাধ্যমে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। বেলা ১১টায় বগুড়া শহরের সাতমাথায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনসহ ১১টি বেসরকারি সংগঠন একই দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তব্য দেন পেস্ড-এর নির্বাহী পরিচালক মাহফুজ আরা মিভা, গ্রামীণ আলোর নির্বাহী পরিচালক ফেরদৌসী বেগম, মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক আবদুস সাত্তার, প্রত্যাশার নির্বাহী পরিচালক মনোয়ারা বেগম, অনাম-এর নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, জিবিএসের নাজির হোসেন, স্বপ্নর জিয়াউর রহমান, টিএমএসএসের মিনতি আক্তার, লাইট হাউসের প্রতিনিধি রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বগুড়ায় পেশিশক্তি ও কালো টাকার জোরে সন্ত্রাসীরা যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বক্তারা এ ধরনের সহিংস ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর