শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

এবার হচ্ছে ইসলামী জোট

নেতৃত্বে তরিকত ফেডারেশন, থাকবে চমক

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

এবার হচ্ছে ইসলামী জোট

ইসলামী দলগুলোর মধ্যে আবারও জোট করার নতুন চমক আসছে। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের উদ্যোগে একটি ঐক্য-প্রচেষ্টা এগিয়ে চলেছে গত প্রায় ছয়মাস ধরে। নতুন এই জোট নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ইতিবাচক ইঙ্গিত রয়েছে বলে জোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি দলের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নতুন এই জোট প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি। গত কয়েক মাসে তিনি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর মধ্যে কয়েকজন কওমিপন্থি নেতা নতুন দল করার ব্যাপারেও ঐকমত্যে এসেছেন।

জানা গেছে, রমজানের আগে ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (জাফরুল্লাহ খান), ইমাম-উলামা পরিষদ, ফরায়েজি আন্দোলনের কয়েকজন নেতার সঙ্গে নিবিড় আলোচনা করেন এম এ আউয়াল। এই প্রক্রিয়া কীভাবে সামনে এগুবে, নির্বাচনী তৎপরতা নাকি কর্মসূচিভিত্তিক হবে, এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি তরিকত ফেডারেশন। তবে দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বসর মাইজভাণ্ডারী ঐক্য প্রক্রিয়ার বিপরীতে বলে জানিয়েছে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর বিশ্বস্ত সূত্র।

জানতে চাইলে তরিকত মহাসচিব এম এ আউয়াল বলেন, ‘ঐক্য প্রচেষ্টা দীর্ঘদিনের। অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। অনেকে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তবে নির্বাচনকেন্দ্রিক হবে নাকি কর্মসূচিভিত্তিক হবে, এটি এখনো ঠিক হয়নি।’ জোটভুক্ত দলে কারা থাকবে, এ নিয়ে চমক থাকবে বলেও জানান এম এ আউয়াল। কয়েক বছর আগেও তরিকত ফেডারেশন প্রগতিশীল ইসলামী জোট নামে একটি জোট করেছিল। ওই জোটে ইসলামিক ফ্রন্টসহ কয়েকটি দল থাকলেও কয়েক মাসের মধ্যেই জোট ভেঙে যায়। ভেঙে যাওয়ার জন্য চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বসরকে দায়ী করা হলেও এর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল বলে জানা গেছে কয়েকটি দলের সূত্রে। এর মধ্যে রমজানের আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জোটে যোগ দেয় ইসলামী ফ্রন্ট। আর ইসলামিক ফ্রন্ট ১৪ দলীয় জোটে আসতে চায়। এরই মধ্যে দলটির ১৪ দলীয় জোটে যোগদান সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গেছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ইঙ্গিতে তরিকত ফেডারেশন একটি জোট করতে চায়। এই জোটের নেতৃত্বে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকেও ভাবা হচ্ছিল। তার সঙ্গে কথা বলেছেন এম এ আউয়াল এমপিও। তবে তাদের মধ্যে সমঝোতা কতদূর, এ নিয়ে পরিষ্কার জানাতে পারেনি সূত্র। নতুন গঠিতব্য এই জোট নিয়ে সরকারও আগ্রহী। তবে কোন ফরম্যাটে হবে, কর্মসূূচি কি হবে, এটি ঠিক হয়নি।

কওমিপন্থি দলগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই এখন নির্বাচনমুখী। এর মধ্যে খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ছাড়া বাকি দলগুলো কোনো জোটে নেই। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রত্যাশা, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দলগুলোর দুটি জোট হতে পারে। একটি ইসলামী ঐক্যজোটের নেতৃত্বে, অন্যটি তরিকত ফেডারেশনের নেতৃত্বে। এই জোটটি আক্ষরিক অর্থে জামায়াতের বিরুদ্ধে কর্মসূচি দিতে পারে।  নতুন এই জোটে যাওয়ার বিষয়ে খেলাফত আন্দোলন আগ্রহী বলে জানা গেছে। দলটির আমির মাওলানা জাফরুল্লাহ খান বলেন, দল যেহেতু করেছি, নেতা-কর্মীরা চাইলে জোটে যাব। তবে কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।’ নতুন জোটে যেতে পারেন ইমাম ও উলামা পরিষদের আমির মাওলানা রুহুল আমিন সাদী। সিলেটের একটি মাদ্রাসার এই প্রিন্সিপাল বলেন, ‘প্রথমত, আমি দলের আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা করিনি। আর নতুন কোনো জোটে যাব কিনা, এটা এখন বলা সম্ভব না।’ উল্লেখ্য, রুহুল আমীন সাদী খেলাফত মজলিসের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এবং ইসলামী ছাত্র মজলিসের দুই বারের সভাপতি। তার নেতৃত্বে একটি নতুন দল আত্মপ্রকাশ করবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর