শিরোনাম
শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

পটোল চাষে খুশি কৃষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

পটোল চাষে খুশি কৃষক

ভরা বর্ষায় এবার সব সবজির দামই চড়া। তবে পটোলের দাম আরেকটু বেশি। চাষিরা জানিয়েছেন, এবার পটোলের ফলন হয়েছে ভালো। আর ভরা বর্ষায় এর দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। এতে তারা বেশ খুশি।

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিদিরপুর হাট জেলার অন্যতম বড় একটি সবজির বাজার। এখান থেকেই ট্রাকভর্তি সবজি যায় ঢাকায়। গত রবিবার ওই হাটে পটোল বিক্রি করতে গিয়েছিলেন চাষি মোবারক আলী (৫০), আবদুল গফুর (৪৫), জুলমত শেখ (৫৫) ও জাহাঙ্গীর আলমসহ (৩০) আরও অনেকে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সব চাষিই এবার পটোল চাষে লাভের মুখ দেখেছেন। এবার নিয়মিত বৃষ্টিপাত পটোলের ফলন এনেছে ভালো। আর বর্ষা এনেছে ভালো দাম। এমন দাম আরও কিছুদিন পেলে বিঘায় তারা কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছেন। বিদিরপুর হাট থেকে পাইকারিতে পটোল কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান রাজশাহীর কাঁটাখালী এলাকার সেলিম রেজা। তিনি জানান, এই হাট থেকে প্রতিদিনই ট্রাকে ট্রাক পটোল যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। মোহনপুর ছাড়াও পাশের পবা, দুর্গাপুর ও বাগমারা উপজেলার চাষিরা এখানে আসেন পটোল বিক্রি করতে। আরেক ব্যবসায়ী মোজাফফর হোসেন বলেন, প্রতি মণ পটোল তারা পাইকারিতেই ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা দরে কিনছেন। এ অঞ্চলে অধিকাংশ পটোলই চাষ করা হয় মাচায়। তাই ভালো দাম দেওয়া হচ্ছে পটোলের। পটোলের এ দাম গত বছরের চেয়েও ভালো। আর এখনকার এই দাম মৌসুমের শুরু থেকেই প্রায় একই রকম রয়েছে। জেলার পটোল চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধান, গম ও পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে বিভিন্ন সময়ে ক্ষতির শিকার হওয়ায় তারা দিন দিন সবজি চাষের দিকেই ঝুঁকছেন। এক্ষেত্রে তারা অন্য সবজির চেয়ে পটোলের আবাদ করেই বেশি লাভবান হচ্ছেন। ভালো দাম এবং সারা বছর চাহিদা থাকায় দিন দিন পটোলের আবাদও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পবা উপজেলার আন্ধারকোঠা গ্রামের কৃষক ফিরোজ হোসেন গত বছর ৩০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক পটোলের আবাদ করেন। প্রথম বছরে ব্যাপক সফলতা পান। সে কারণে চলতি মৌসুমে তিনি আবাদের জমি বাড়িয়েছেন। তার সাফল্য দেখে একই এলাকার রফিকুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, কুরবান আলীসহ এলাকার আরও অন্তত ১৫ জন চাষি এবার পটোলের আবাদে নেমেছেন। প্রান্তিক এসব কৃষক জানান, জমি তৈরি থেকে শুরু করে বীজ, জৈবসার, বালাইনাশক ও মাচা তৈরিসহ এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ৭০-৭৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার পটোল উৎপাদন হয়। তারা জানান, রোপণের তিন মাসের মধ্যে পটোল তোলা শুরু হয়। একটানা সাড়ে আট মাস পটোল তোলা যায়। আর পটোলের চাহিদা থাকে সারা বছরই। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজশাহীর প্রতিটি উপজেলায় দিন দিন পটোলের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৮০ হেক্টর জমিতে পটোলের আবাদ হয়েছে। নিরাপদ সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগতসহ সব ধরনের সহযোগিতা কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি হেক্টর জমি থেকে ১৪ মেট্রিক টন পটোল উঠেছে। আরও পটোল উঠবে। জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, পটোল উচ্চমূল্যের ফসল। সারা বছর পটোলের চাহিদা থাকে। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন জেলায় পটোলের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর