বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
ক্ষমতার অপব্যবহার করে খরচ

আরডিএ চেয়ারম্যানকে টাকা ফেরতের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অনিয়মে ডুবতে বসেছে সরকারের নগর উন্নয়ন সংস্থাটি। ক্ষমতাবহির্ভূতভাবে একাধিক গাড়ি ব্যবহার ছাড়াও আরডিএর গাছ কেটে নিজ বাড়িতে ব্যবহার ও ঢাকার নিকুঞ্জতে থাকা আরডিএর রেস্টহাউসে ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহার করে গাড়ি ব্যবহারের বিষয়টি উঠে এসেছে অডিট আপত্তিতে। আপত্তির সেই টাকা চেয়ারম্যানকে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। তবে আরডিএ চেয়ারম্যান বজলুর রহমান জানান, তিনি পূর্ত অধিদফতরের অডিট আপত্তি ও তাকে টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে এমন কোনো চিঠি পাননি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদমর্যাদার দিক থেকে আরডিএ চুক্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বজলুর রহমান যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। বিধি-মোতাবেক তিনি কর্মঅধিক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক একটি সরকারি গাড়ি ব্যবহারের অধিকারপ্রাপ্ত হন। কিন্তু আরডিএর চেয়ারম্যান বজলুর রহমান রাজশাহীতে একটি এবং ঢাকায় একটি মিলে দুটি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন। গত ৬ জুলাই পূর্ত অধিদফতরের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট অফিসার এনামুল হক ভূঁইয়ার দাখিল করা অডিট প্রতিবেদন অনুযায়ী, বজলুর রহমান রাজশাহীতে একটি গাড়ি (রাজ-মেট্রো-ঘ-১১-০১০৩) এবং ঢাকায় অবস্থান করার সময় (রাজ-মেট্রো-ন-১১-০২২৩) গাড়িটি ব্যবহার করেন। নিরীক্ষা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বজলুর রহমান ঢাকায় ব্যবহার করা গাড়িটি চালানোর জন্য নুরুল ইসলাম নামের আরডিএর একজন গাড়িচালককে স্থায়ীভাবে রেখে দিয়েছেন। চালক নুরুল ইসলাম নিকুঞ্জ এলাকায় কেনা আরডিএর রেস্টহাউসে থাকেন। বেতন ছাড়াও ঢাকায় অতিরিক্ত সময় গাড়ি চালনা ও রাজশাহী-ঢাকার মধ্যে যাতায়াতের জন্য গাড়িচালক নুরুল ইসলামকে ওভার টাইমও দেওয়া হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৪-১৬ অর্থবছরে বজলুর রহমান অধিকারবহির্ভূতভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার, গাড়ির জ্বালানি ও মেরামত খরচ এবং গাড়ি চালকের ভ্রমণভাতা বাবদ ৩ লাখ ৫ হাজার ১৭৩ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন। এই টাকা বিধি মোতাবেক বজলুর রহমানকে ব্যক্তিগতভাবে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তহবিলে জমা দিয়ে প্রমাণক ব্রডশিট আকারে পূর্ত অডিট দফতরে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পূর্ত অডিট অধিদফতরের সূত্র মতে, রাজধানীর নিকুঞ্জতে আরডিএর একটি রেস্টহাউস আছে। এই রেস্টহাউস ব্যবহারে কেউ ভাড়া দেন না। চেয়ারম্যান বজলুর রহমানসহ আরডিএর বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারাও রেস্টহাউসে বিনা ভাড়ায় অবস্থান করেন। এতে আরডিএর বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারেও আলাদা আপত্তি প্রতিবেদন দিয়েছে। আগামী ২৯ আগস্ট বজলুর রহমানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ শেষ হওয়ার কথা। দুই দফায় তিনি তিন বছর দায়িত্ব পালন করছেন।

সর্বশেষ খবর