বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

রংপুরে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ফেসবুকে যুবক গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রংপুরে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ও স্থিরচিত্র ফেসবুকে এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে নুর মোহাম্মদকে (২৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার রাতে নগরীর লালবাগ কলেজপাড়া থেকে নুর মোহাম্মদকে গ্রেফতার করা হলেও গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রংপুর পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওছার।  

ধর্ষক নুর মোহাম্মদ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ ঝুনাগাছ এলাকার শফিয়ার রহমানের ছেলে। ডিমলার একটি বেসরকারি পলিটেকনিক  ইনস্টিটিউট থেকে সদ্য পাস করেছেন। মেয়েটির বাড়িও একই এলাকায়। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওছার জানান, মেয়েটি রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় নুর মোহাম্মদের। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল মেয়েটিকে নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়ে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করে নুর মোহাম্মদ। এ সময় ধর্ষণের চিত্র মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রাখে। পরবর্তীতে ধর্ষণের ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এদিকে এইচএসসি পাস করার পর মেয়েটি কারমাইকেল কলেজে বাংলা বিভাগে প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন। কলেজসংলগ্ন একটি মেসে থেকে লেখাপড়া করছেন। এরই মধ্যে মেয়েটি বিয়ের চাপ দিলে রাজি হয়নি নুর মোহাম্মদ। মেয়েটি তাকে আগের মতো পাত্তা দিচ্ছিলেন না। এ অবস্থায় নুর মোহাম্মদ ধর্ষণের সেই ভিডিওচিত্র ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি জানার পর মেয়েটি ৬ আগস্ট আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আত্মহত্যার কারণ জানতে পেরে তার সহপাঠীরা বিষয়টি পিবিআই পুলিশকে জানায়। এ ছাড়া মঙ্গলবার কোতোয়ালি থানায় মেয়েটি বাদী হয়ে নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে রুজু করা হয় বলে কোতোয়ালি থানার ওসি এবিএম জাহিদুল ইসলাম জানান। এরপর মেয়েটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে নুর মোহাম্মদকে ডেকে আনেন। এ সময় সাদা পোশাকে পিবিআইর একটি দল সেখানে অপেক্ষা করছিল। নুর মোহাম্মদ আসার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন সেট, একটি পেনড্রাইভ, তিনটি মেমোরি কার্ড, চারটি মোবাইল সিম জব্দ করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাওছার জানান, জব্দ করা পেনড্রাইভ ও মেমোরি কার্ডে মেয়েটিকে ধর্ষণের ভিডিও ও স্থিরচিত্র পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুর মোহাম্মদ ধর্ষণ এবং ভিডিওচিত্র ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে। নুর মোহাম্মদ আরও একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের ধর্ষণ করেছে বলেও স্বীকার করেছে। সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইর বিশেষ পুলিশ সুপার মজিদ আলী বলেন, কোতোয়ালি থানায় মেয়েটি মামলা করার পর আমরা মামলার তদন্তভার নেই।

সর্বশেষ খবর