বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

৩০২ অস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্স দেন ডিসির কর্মচারী!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা (জেএম) শাখার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শামসুল ইসলাম ৩০২টি অস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্স দিয়েছিলেন! এরমধ্যে ৫৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬১৩টি কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৬টি একনলা বন্দুক ও ৪৯টি শর্টগান। গতকাল বিকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাকে দুদফায় আটদিন রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রংপুর দুদকের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শামসুল ইসলামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী যারা লাইসেন্স নিয়েছিলেন গত ২ আগস্ট থেকে তাদের প্রত্যেককে নোটিস দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্সধারীরা তাদের অস্ত্র জমা দিচ্ছেন। গতকালই ২১ আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২৫টি কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে। শামসুল বর্তমানে রংপুর কারাগারে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, শামসুল ইসলাম জেএম শাখায় ২০০৩ সালের ২ ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের ৬ জুলাই এবং ২০১১ সালের ১৭ মে থেকে ২০১৭ সালের ১৭ মে  পর্যন্ত এই পদে কর্মরত রংপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের স্বাক্ষর জাল করে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন। সংবাদ সম্মেলনে দুদক রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক আব্দুল আজিজ ভুঁইয়া, রংপুর দুদকের উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে শামসুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে তার কক্ষের আলমারীর তালা ভেঙে সেখান থেকে  ৭ লাখ ১০০ টাকা, তার নামে ১১ লাখ টাকার দুটি এফডিআর এবং ২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র উদ্ধার করেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ইস্যু করা ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ লাইসেন্স জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অমূল্য চন্দ্র রায় ১৮ মে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পরেরদিন জেলা প্রশাসক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর থেকে পলাতক ছিলেন শামসুল। তার বাড়ি রংপুর নগরীর খোর্দ্দ তামপাট এলাকায়। গত ৫ জুলাই রাতে ঢাকার নিউমার্কেট থেকে শামসুলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

সর্বশেষ খবর