দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাত জেলায় বাস ধর্মঘটে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রিহুইলার চলাচল বন্ধ ও বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতিসহ পাঁচ শ্রমিককে কুপিয়ে জখম করার প্রতিবাদে গতকাল সকাল ৬টা থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। তবে রাতে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। বরিশাল বিভাগীয় বাস মালিক ও শ্রমিক সমন্বয় কমিটি এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। এতে সমর্থন দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ রাখে বাগেরহাট জেলা বাস মালিক সমিতিও। বরিশাল নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে বিভাগের ৬ জেলা বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী (পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাসহ), বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাটের অর্ধশতাধিক রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও বৃষ্টিস্নাত পরিস্থিতিতে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ ছিল চরমে। গতকাল দিনভর বর্ষায় নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ দেখা গেছে। অফিস, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থী, চাকুরে, সাধারণ যাত্রী এবং রোগী নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে অনেককে। কুয়াকাটার আবদুল মালেক বলেন, স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে বরিশালে এসেছিলেন। চিকিৎসা করিয়ে টাকা-পয়সা সব শেষ। বাড়ি যাওয়ার জন্য গতকাল সকালে রূপাতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখেন বাস ধর্মঘট। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ঘণ্টা দুয়েক টার্মিনালে বসে থেকেও বেশি টাকা না থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় বাড়ি ফেরার কোনো উপায় পাচ্ছিলেন না তিনি।
পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালী-কুয়াকাটাসহ জেলার বিভিন্ন রুটে ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে কুয়াকাটাগামী শত শত পর্যটক। ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা একাধিক পর্যটক জানান লঞ্চ থেকে নেমে তারা দেখেন বাস চলাচল বন্ধ। এখন কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, ৮ আগস্ট বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের কর্ণকাঠি এলাকায় বাসে চাঁদাবাজির খবর পেয়ে মালিক সমিতির সভাপতিসহ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতে চাঁদাবাজদের হামলায় সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম খোকনসহ পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে বন্দর থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরদিন ৯ আগস্ট রূপাতলী টার্মিনালে মালিক সমিতি কার্যালয়ে বিভাগের ৬ জেলা বাস মালিক সমিতি এবং শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের যৌথ সভায় পুলিশের কাছ থেকে আইনি সহায়তা না পাওয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের থ্রিহুইলারসহ ভাড়া মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিস্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়।