শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাবিতে ছাত্রদলকে ছাত্রলীগের ধাওয়া

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে ধাওয়া দিয়েছে ছাত্রলীগ। ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিতে এলে ছাত্রদলের শতাধিক নেতা-কর্মীকে ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করে ছাত্রলীগের ১০-১৫ জন নেতা-কর্মী। গতকাল দুপুরে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে’ এই মুক্ত আলোচনা আয়োজন করা হয়। জানা যায়, আলোচনা শুরুর আগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকীর নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী। এ সময় মধুর ক্যান্টিনের আশপাশে উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগের ১০-১৫ জন নেতা-কর্মী তাদের ধাওয়া দেয়। ধাওয়াকারী ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কাজী এনায়েত, মেহেদী হাসান রনি, আদিত্য নন্দী, হাজী মুহাম্মাদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জহির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানি, এস এম হলের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল প্রমুখ। ধাওয়ার বিষয়ে মেহেদী হাসান রনি বলেন, ঢাবির পরিবেশকে অস্থিতিশীল করতে একটি মহল অপচেষ্টা করছে। হঠাৎ করে অছাত্রদের নিয়ে ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে প্রবেশ ষড়যন্ত্রেরই অংশ। এই কাজে সহযোগিতা করছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। তারা দাওয়াত দিয়ে অছাত্র ছাত্রদল নেতাদের ক্যাম্পাসে ডেকে নিয়ে এসেছিল। তাই ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে ছাত্রলীগ ছাত্রদল ক্যাডারদের ক্যাম্পাস ছাড়া করে। ধাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, ডাকসুর দাবিতে ডাকা পূর্ব ঘোষিত উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিতে এসেছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতারা আমাদের সে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিতে দেয়নি। তারা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমাদের মুহসীন হল ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মামুন আহত হন। এদিকে এ মুক্ত আলোচনায় ছাত্রলীগকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলে আলোচনায় অংশ নেবেন বলেও জানান আবিদ আল হাসান। তিনি বলেন, আমরাও ডাকসু নির্বাচন চাই। আর এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকলে উপস্থিত হব। কোনো ভিত্তিহীন ডাকে আমরা সাড়া দেব না। আলোচনায় ডাক দেওয়া সমন্বয়কদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মোতাহের হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, যারা আলোচনার জন্য ডাক দিয়েছে তারা বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। প্রশাসনের অধীনে মুক্ত আলোচনা হলে আমরা সেখানে অংশ নেব। মুক্ত আলোচনার ডাক দেওয়া কর্মসূচির সমন্বয়ক সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কর্মী মাসুদ আল মাহদী বলেন, আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। প্রত্যেক সংগঠনের তিনজন প্রতিনিধি আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ছাত্রদল অনেক নেতা-কর্মী নিয়ে ক্যাম্পাসে শোডাউনের মতো করে উপস্থিত হয়েছিল। যেহেতু আমাদের আমন্ত্রণে তারা এসেছিল, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করাটা ঠিক হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সব ছাত্র সংগঠনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল বলে জানান মাহদী। পরে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের অনুপস্থিতিতেই চলে মুক্ত আলোচনা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টে মার্কসবাদী ও খালেকুজ্জামান অংশ এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের দুই অংশ। সভা থেকে ডাকসু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সর্বশেষ খবর