শিরোনাম
শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট

এসি চলে না, পানি চাইলেই ধমক

জিন্নাতুন নূর

যাত্রীদের লাগাতার অভিযোগের পরও বাংলাদেশ বিমানের যাত্রী সেবার মানোন্নয়ন হচ্ছে না। এতে যারা বিমানে (অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) নিজস্ব গন্তব্যে যেতে আগ্রহী তারা এখন অনেকটা হতাশ হয়েই বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর সেবা নিচ্ছেন। অবস্থা এতটাই খারাপে পৌঁছেছে, যাত্রীরা বিমানে খাবার পানি চাইলে শুনতে হচ্ছে বিমানবালাদের ধমক। আর শীতাতপ যন্ত্র চালানো হলেও তাতে বিমান ঠাণ্ডা হচ্ছে না। এ জন্য গরমে বিমানের যাত্রীদের পুরো যাত্রায় অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো বিলম্বে গন্তব্যে যাচ্ছে বিমান। বাংলাদেশ বিমানের গত ৮ আগস্টের ঢাকা-সিলেট রুটের বিজি-৬০১ ফ্লাইটের দেড়শ যাত্রী নিয়ে দুপুর ১২টার ফ্লাইটটি সিলেটের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ মিনিট আগেই যাত্রীদের ডাকে। এ সময় বিমানের নির্দিষ্ট বাস যাত্রীদের বিমানে নিয়ে যায়। অবাক হতে হয়, ঢাকার রাস্তায় চলাচলকারী লক্কড়-ঝক্কড় বাসের সঙ্গে বিমানের এই বাসটির কোনো পার্থক্য নেই। সেই বাস পুরনো জং ধরা, কিছু জায়গায় ভাঙা, বাসের ভিতরের অংশটিও ছিল অপরিষ্কার। পুরনো রং জ্বলে যাওয়া সিটের ওপর ধুলার স্তর। এমন অবস্থা দেখে যাত্রীদের অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেন। লন্ডন থেকে আসা এক সিলেট প্রবাসী দম্পতিও ছিল বাসে। তারা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা বেসরকারি সেবা না নিয়ে বিমানেই সব সময় গন্তব্যে যেতে চাই। এমনকি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটেও বিমানের সেবা নিতে চাই। কিন্তু বিমান যদি তাদের যাত্রী সেবার মান উন্নত না করে তবে যাত্রীরা অবশ্যই বিমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। বাস থেকে বিমানে ওঠার পরও মালামাল তোলা হয়নি এমন কারণ দেখিয়ে সেই ফ্লাইটটি নির্দিষ্ট সময়ের ৪৫ মিনিট পর রওনা হয়। এ সময় যাত্রীরা বিলম্বে ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিমান ছাড়ার পর দেখা যায়, বিমানের শীতাতপ যন্ত্রটি চালু করা হলেও ঠাণ্ডা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে বিমানবালাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো উত্তর দিতে পারেননি। ফলে আধা ঘণ্টার এই ফ্লাইটে যাত্রীদের গরমে হাঁসফাঁস করতে হয়। অনেক শিশু এ সময় গরমে কাঁদতে শুরু করে। অনেক যাত্রীকে আবার ঘেমে একাকার হতে দেখা যায়। এক যাত্রী তীব্র পিপাসায় একজন বিমানবালার কাছে খাবার পানি চাইলে তিনি পাননি। উল্টো বিমানবালার ধমক খেয়েছেন। একটি অনলাইন পত্রিকার মার্কেটিং কর্মকর্তা সারাফাত বিমানবালার কাছে পানি খেতে চাইলে সেই বিমানবালা তাকে ঝাড়ি দিয়ে বলেন, সব যাত্রী পানি চাইলেই তো আর পানি দিতে পারব না! বিমানবালার ঝাড়ি খেয়ে সেই যাত্রী দ্বিতীয়বার আর পানি খেতে চাননি। এমনকি বিমানের ঢাকা-সিলেটের ১২৫ মাইলের এই ফ্লাইটে যাত্রীদের স্ন্যাকস জাতীয় খাবার দেওয়ার কথা টিকিটে উল্লেখ থাকলেও সিলেট যাওয়ার পথে কেক, বাদাম ও জুস দেওয়া হলেও ঢাকায় আসার পথে শুধু পানি ও ছোট বাদামের একটি প্যাকেট দেওয়া হয়। যাত্রীদের একজন তখন বলে ওঠেন, বিমান যাত্রীদের সঙ্গে খাবার দেওয়ার নামে ঠাট্টা করছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর