শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

শরীয়তপুরে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে যুবলীগ নেতা নিহত

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের আন্দারমানিক বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন (২৫) নিহত হয়েছেন। গতকাল         সন্ধ্যা ৬টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আরও ২৫ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির গাজী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দাদন মীরবহরের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইউপি নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। গত ইউপি নির্বাচনের পর দুই পক্ষের মধ্যে ১০টি সংঘর্ষের  ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে নড়িয়া থানায় মামলাও রয়েছে। নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউপি নির্বাচন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন জাকির গাজী। নির্বাচন নিয়ে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি দাদন মীরবহর ও সাবেক চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান মালতের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়। স্থানীয় রাজনীতিতে জাকির গাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাইল হক ও দাদন মীরবহর স্থানীয় সংসদ সদস্য শওকত আলীর সমর্থক। সংঘর্ষ সম্পর্কে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে জাকির গাজীর সমর্থকদের মারধর করে দাদন মীরবহরের সমর্থকরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাকির গাজীর সমর্থকরা দাদন মীরবহরের আন্দারমানিক বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। এ সময় বোমা হামলা চালানো হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এ সময় শতাধিত ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। সেখানেই ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি ইকবাল হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ইকবালের বাড়ি পাশের রাজনগর মালতকান্দি গ্রামে।

তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আমিন ফকিরের ছেলে। নিহত ইকবালের বাবা আমিন ফকির বলেন, আমরা বংশপরম্পরায় আওয়ামী লীগ করি। এখন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে হায়েনারা আমাদের রক্ত পান করছে। অন্যায়ভাবে জাকির গাজীর সমর্থকরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।

রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির গাজী বলেন, দাদন মীরবহর ও আলিমুজ্জামান মালতের সমর্থকরা আমার তিন কর্মীকে কুপিয়ে আহত করেছে। আমার সমর্থকদের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। তখন সংঘর্ষ হয়েছে। কাদের হামলায় ইকবাল মারা গেছে তা আমার জানা নেই।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম বলেন, নিহত ইকবালের শরীরের বিভিন্ন স্থানে  গুলি রয়েছে। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের প্রাথমিক ধারণা। আরও ২৫ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এহসান শাহ বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর