সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
ট্রেনের নিচে বাবার আত্মহত্যা

পাওনাদারকে ফাঁসাতে গিয়েই মেয়েকে খুন করেন বাদল

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

পাওনাদারকে ফাঁসাতে গিয়েই নিজের কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের জগদ্গাতী গ্রামের সাইদুর রহমান বাদল। শনিবার সিরাজগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরিফুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দিতে নিহত কলেজছাত্রী সাথীর মা ও বড় বোন এ তথ্য দেন। এর আগে ৬ আগস্ট গভীর রাতে বাদল তার মেয়ে সাথী খাতুনকে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যার দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে দুই দিন পর ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। সাথী হত্যার ঘটনার তার মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করেন। সাথী শিয়ালকোলের আবদুল্লাহ আল মাহমুদ স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্রী ছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, বাদল পেশায় আদমবেপারি ছিলেন। নিজ ও আশপাশের গ্রামের অনেককে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে তিনি ৮-১০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। ঋণগ্রস্ত বাদল পাওনাদারদের ফাঁসানোর জন্য দুই ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে নিজের মেয়েকে সাথীকে হত্যা করেন। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাবে বুঝতে পেরে পরে তিনি আত্মহত্যা করেন। সাথীর মা মনোয়ারা বেগম ও বড় বোন সুমির জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসআই তরিকুল বলেন, ঘটনার রাতে বাদলের দুই ভাগ্নে জিন্নাহ ও জিল্লুর তাদের বাড়ি আসেন। রাত ৯টার দিকে সাথীর সঙ্গে জরুরি আলোচনা আছে বলে স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও বড় মেয়ে সুমিকে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দেন বাদল। ওই সময় বাদলের বাড়িতে থেকে যান জিন্নাহ ও জিল্লুর। মনোয়ারা ও সুমি পাশের বাড়ি থেকে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে সাথীর খোঁজ জানতে চাইলে বাদল বাঁশঝাড়ে নিয়ে সাথীর লাশ দেখান। ভয়ে প্রথম দিকে তারা এ কথা কাউকে জানাননি। কিন্তু দ্বিতীয় দিন মেয়ের দাফন ও জানাজা শেষে বাড়ি ফিরে আসার পর স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় বাদলের। একপর্যায়ে বাদল মেয়েকে খুন করার কথা স্বীকার করেন।

এর কিছুক্ষণ পরই বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল রেলস্টেশনের কাছে গিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন বাদল। জবানবন্দি শেষে মনোয়ারা বেগম ও সুমিকে তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান এসআই তরিকুল। সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন জানান, প্রথম থেকেই ঘটনাটি পরিবারের লোক ঘটিয়েছিল বলে সন্দেহ হচ্ছিল। কিন্তু নিশ্চিত না হওয়ায় এবং বাবা হওয়ার কারণে বাদলকে শুরুতেই আইনের আওতায় আনা যায়নি। বাদলের দুই ভাগ্নে জিন্নাহ ও জিল্লুরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর