‘বঙ্গবন্ধু ১৫ আগস্ট মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে অনেককেই ফোন করেছিলেন। কিন্তু এগিয়ে আসেননি কেউ। শেষ রাতে ফোন বেজে উঠল বাসার। আমার মা আঞ্জুমান আরা জামিল ফোন রিসিভ করলে ওপার থেকে বঙ্গবন্ধু বললেন, জামিলকে দে। বাবা ফোন ধরে কিছুক্ষণ চুপ করে শুনলেন তারপর বললেন, জি স্যার। সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গভবন থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লেন তিনি। বাবা যখন পৌঁছালেন সোবহানবাগ মসজিদের আগেই বেরিকেড দেওয়া ছিল। তিনি যেতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় মেজর হুদা সামনে এসে জিজ্ঞেস করে, হু ইজ দ্যাট? বাবা বলেন, দিস ইজ কর্নেল জামিল। এর সঙ্গে সঙ্গেই বাবাকে গাড়িতে বসা অবস্থাতেই ব্রাশ ফায়ার করেন হুদা। আমার বাবা জীবন দিয়ে বাঙালি জাতির কলঙ্ক ঘুচিয়ে দিয়ে গেছেন। তার মতো যদি আরও অনেকে ছুটে আসতেন তাহলে হয়তো বেঁচে যেতেন বঙ্গবন্ধু।’ রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলের মেয়ে আফরোজা জামিল কঙ্কা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। শেষ বারের মতো বাবার মুখটিও দেখতে দিতে চায়নি উল্লেখ করে আফরোজা জামিল কঙ্কা বলেন, আমাদের বাবার মুখটিও শেষবার দেখতে দিতে চায়নি ঘাতকরা। পরবর্তীতে আমাদের শর্ত দেওয়া হয় বাবাকে দেখতে দেবে কিন্তু কান্না বা চিৎকার করা যাবে না। গোসল করানোর পরে বাবার লাশ গ্যারেজে রাখা হলো। তখন আমরা বাইরে আসলাম। সৈন্যরা অস্ত্র হাতে চারপাশে পজিশন নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। আমার মা গিয়ে হাঁটু গেড়ে বাবার পায়ের কাছে বসলেন। প্রিয় মানুষটিকে শেষবারের মতো দেখলেও কাঁদতে পারলেন না। রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব জামিল আহমেদের দায়িত্বের কথা বলতে গিয়ে তার মেয়ে আফরোজা জামিল বলেন, আমার বাবার জন্ম ১৯৩৩ সালে গোপালগঞ্জে। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তান আর্মি থেকে ফেরার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। আমার বাবা জীবন দিয়ে তার দায়িত্ব পালন করে গেছেন।