শুক্রবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগ-বিএনপিতে একাধিক একক প্রার্থী জাপায়

রফিকুল ইসলাম রনি

আওয়ামী লীগ-বিএনপিতে একাধিক একক প্রার্থী জাপায়

নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকলেও ঢাকা-৫ (১৭৮-ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) আসন এলাকায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। হ্যাটট্রিক জয়ের লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপিসহ সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিয়মিত উঠান বৈঠক, কর্মিসভা, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশ, দলের সদস্য নবায়ন ও নতুন সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করে চলেছেন। আর পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি। ১৯৯০ সালের আগে জাতীয় পার্টির দুর্গখ্যাত এই আসনটি ফিরে পেতে জোর তত্পর জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাপা। এ আসনে আওয়ামী লীগের চারজন, বিএনপির তিনজন এবং জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী। তারা প্রত্যেকেই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ আসনে ভোট লড়াই হবে নবীন-প্রবীণে।

ঢাকা-৫ আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান মোল্লা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাইবেন। সে লক্ষ্যে এলাকায় কাজ করে চলেছেন। তবে কোনো কারণে তিনি দলের মনোনয়ন না চাইলে এ আসনে  মনোনয়ন চাইবেন তার সন্তান ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজল। তিনি নিয়মিত এলাকায় গণসংযোগ, কর্মিসভা, পথসভা ও দলের সদস্য পদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান করে চলেছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মুন্না। তারা দুজনই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। সেভাবেই নিয়মিত এলাকায় কাজ করছেন। অংশ নিচ্ছেন উঠান বৈঠকে। গত কোরবানি ঈদে যাত্রাবাড়ী গরুর হাটে শেয়ার বিক্রি এবং টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় মনিরুল ইসলাম মনুর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমান এমপি পুত্র মশিউর রহমান সজল আগামীতে এই আসনে শক্তিশালী প্রার্থী বলে মনে করেন স্থানীয়রা। দলটির নেতা-কর্মীরা বলছেন, ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকার পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা তিনবারের এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা বয়সের কারণে এবার মনোনয়ন না পেলে তার পরিবার থেকেই নৌকা প্রার্থী করা হতে পারে।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ। এবার এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশ গ্রহণের আলোচনা রয়েছে। তবে সম্ভব না হলে বিএনপির বাণিজ্য সম্পাদক সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ পেতে পারেন দলীয় মনোনয়ন। এ আসনে বিএনপির আরেক শক্তিশালী প্রার্থী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি সাবেক কমিশনার নবী-উল্লাহ নবী। জেলে বা বিদেশ থাকা ব্যতীত পুরো সময়টা তিনি নির্বাচনী এলাকায় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে থাকেন। এ ছাড়াও বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি জয়নাল আবেদীন রতন।

আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর সাংগঠনিকভাবে অগোছালো বিএনপির কারণে এ আসনে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে জাতীয় পার্টি। এ আসন থেকে এবার জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ। সাবেক তারকা ফুটবলার আসুদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির প্রতিটি অঙ্গ সংগঠনকে চাঙ্গা করছেন তিনি। অনেকটা আগেই ভাগেই নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকায় ব্যাপক পোস্টারিং করেছেন। পার্টি জোটগত নির্বাচন করলে অন্যান্য আসনের সঙ্গে এই আসনটিও চাইবেন এরশাদ। সেক্ষেত্রে আসুদের জোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি জোটগত নির্বাচন না করে এককভাবে নির্বাচন করলেও দুই বড় দলের নানা সংকটে জাপা প্রার্থী আসুদই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সর্বশেষ খবর