শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাস-ট্রেনে ঈদের টিকিট বিক্রি শুরু

কমলাপুরে দীর্ঘ লাইন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাস-ট্রেনে ঈদের টিকিট বিক্রি শুরু

রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইন —জয়ীতা রায়

আবারও দোরগোড়ায় ঈদ। মানুষ ছুটবেন গ্রামমুখো। এ জন্য এরই মধ্যে বাস-ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ফলে ভিড় বেড়েছে কাউন্টারগুলোয়। রাজধানীর  কমলাপুর রেলস্টেশনে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভিড় করতে থাকেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। কিন্তু টিকিট বিক্রি শুরু হয় গতকাল সকাল থেকে। স্টেশন চত্বর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুরোটাই ছিল লোকে লোকারণ্য। এর পরেও এসি টিকিট ছাড়া সাধারণ টিকিট মিলেছে কিছুটা স্বস্তিতে। একই দিনে ঈদের আগাম টিকিট বিক্রি হয় উত্তরাঞ্চলের বাস কাউন্টারগুলোতেও। কাউন্টারে টিকিটপ্রত্যাশীদের লাইন দেওয়া শুরু হয় বৃহস্পতিবার থেকেই। গতকাল আগাম টিকিট বিক্রির প্রথম দিন ২৭ আগস্টের ট্রেনের টিকিট দেওয়া হয়। আজ শনিবার বিক্রি হবে ২৮ আগস্টের টিকিট। আগামীকাল রবিবার, সোমবার ও মঙ্গলবার বিক্রি করা হবে যথাক্রমে ২৯, ৩০, ৩১ আগস্টের আগাম টিকিট। সব মিলিয়ে ৫ দিনের আগাম টিকিট বিক্রি হবে। বাসের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে গাবতলী, মাজার রোড, আসাদগেট ও কল্যাণপুরের বাস কাউন্টারগুলোতে। ২ সেপ্টেম্বর ঈদ ধরে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম দিনেই শেষ হয়ে যায় বাসগুলোর বেশিরভাগ টিকিট। সকাল থেকেই রাজধানীর বাসস্ট্যান্ডগুলোতে কাঙ্ক্ষিত টিকিটের জন্য ভিড় করেন শত শত মানুষ। রাজধানীর কল্যাণপুর ও গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে টিকিট পেতে কাউন্টারগুলোতে দীর্ঘ লাইন। উত্তরাঞ্চলের হানিফ, শ্যামলী, এসআর, নাবিল এবং দক্ষিণাঞ্চলের স্কাইলাইন, ভিলেজ লাইন, সাকুরা পরিবহনের কাউন্টারগুলোর সামনে ছিল টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড়। গাবতলী বালুরমাঠে বাস টার্মিনালে টিকিট কিনতে আসা আশরাফুল জানান, তিনি ভোর ৫টা থেকে হানিফ কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মেলেনি টিকিট। হানিফ কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা আলী জানান, প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য অসংখ্য যাত্রী কাউন্টারের সামনে ভিড় করছেন। তবে বেশিরভাগ যাত্রীর চাহিদা ৩১ আগস্টের টিকিটে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর টিকিট হাতে পেয়ে অনেকটা উল্লসিত ছিলেন সাইদুর রহমান। তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। নীলফামারীর জন্য ৩০ তারিখের হানিফ পরিবহনের টিকিট হাতে পেয়ে বেশ আনন্দিত তিনি। খায়রুল জানান, কাঙ্ক্ষিত দিনের ঈদের টিকিট হাতে পেয়ে খুশি তিনি। বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে কাউন্টারের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাইদুর। সকাল ৮টা থেকে কমলাপুর স্টেশনের ২৩টি কাউন্টার থেকে একসঙ্গে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এর অনেক আগে থেকেই টিকিটপ্রত্যাশীরা সারিবদ্ধভাবে স্টেশন চত্বরে দাঁড়ান। এমনি একজন মনির হোসেন জানান, অনেকেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে স্টেশনে অবস্থান নেন। একজন খাতায় উপস্থিতিদের নাম লিখে নেন। পরে সেই নামের ক্রমানুসারে লাইনে দাঁড়ান সকালে। নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রয়েছে আলাদা দুটি কাউন্টার। বিক্রির জন্য ৩১টি আন্তঃনগর ট্রেনের বিভিন্ন গন্তব্যের ২২ হাজার ৪৯৬টি টিকিট ছেড়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩৫ ভাগ ভিআইপি, মোবাইল-ইন্টারনেট ও রেল কর্মচারীদের জন্য রেখে বাকি সব দেওয়া হয় কাউন্টারে। দিনাজপুরের একতা এক্সপ্রেসের এসি টিকিট কিনতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মফিজুল জানান, বিক্রি শুরুর কয়েক মিনিটেই টিকিট শেষ হয়ে যায়। কোনো ট্রেনের এসি কেবিন, চেয়ার বার্থ কিছুই নেই।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, প্রথম দিনে অন্যবারের তুলনায় একটু ভিড় কম। তবে শেষ দুই-তিনদিন ভিড় আরও বাড়তে পারে। প্রতিবছরই এসি টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে।

কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, এসি ছাড়া অন্যান্য টিকিট স্বাচ্ছন্দ্যে নিতে পারছেন যাত্রীরা। এই ঈদে বন্যার কারণে নির্ধারিত তিনটি গন্তব্যে পৌঁছাবে না ট্রেন। গন্তব্যগুলো হলো দিনাজপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও তারাকান্দা। সব আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলেও ২৭ আগস্ট সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট এদিন বিক্রি হয়নি। ফলে টিকিট কিনতে এসে খালি হাতে ফিরে গেছেন অনেকে।

সর্বশেষ খবর