শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

কমলাপুর আইসিডিতে থামছে না জালিয়াতি

আত্মসাৎ হচ্ছে আমদানি পণ্য চলছে শুল্ক ফাঁকির মহোৎসব

রুহুল আমিন রাসেল

কমলাপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) কাস্টমস হাউসে জালিয়াতি থামানো যাচ্ছে না। এ প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়ীদের আমদানিপণ্য আত্মসাৎ, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ক্রিম নিলামের নামে বাজারজাত, সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়াসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, জাল-জালিয়াতি ও অনিয়মের শেষ নেই কমলাপুর আইসিডি কাস্টম হাউসে। এখানে পরিমাণ কম দেখিয়ে আমদানিপণ্যের মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির মহোৎসব চলছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, শুল্ক ফাঁকির মূল প্রবণতা পরিমাণে কম দেখানো। তবে পণ্য চুরি, পণ্য খালাস ও শুল্কায়নে ফাঁকিসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত কতিপয় সিঅ্যান্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্ট ও আমদানিকারক। কাস্টমস ও আইসিডি বন্দরের সংশ্লিষ্টদের জিম্মি করে এসব নামধারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন তারাও জড়িয়ে পড়েছেন অপরাধে। চুরি-ডাকাতি ও মালামাল লুট এখানে নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থার ভিতর দিয়েই কনটেইনার থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য খালাস হচ্ছে। তার মধ্যে মাদকের চালানও খালাস হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট কমলাপুর আইসিডি কাস্টম হাউসের কমিশনারের কাছে পাঠানো এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (শুল্ক গোয়েন্দা ও নিলাম) রিয়াদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়েছে, ‘জালিয়াতির মাধ্যমে ৫ কোটি টাকার আমদানি পণ্য আত্মসাতের বিষয় এনবিআর গঠিত কমিটি তদন্ত করার আগেই, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। দাখিল হওয়া এই প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্কিন ব্লিচ ক্রিমে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক মার্কারি পাওয়া গেছে। এটা নিলাম অযোগ্য এবং ধ্বংসযোগ্য হওয়াতে সরকারের কোনো রাজস্ব ক্ষতি হয়নি। তাই শুল্ক ও কর পরিশোধের দায় কারও ওপর বর্তায় না।’ তবে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক এ ক্রিম বন্দরের বাইরে চলে যাওয়া এবং তা জনসাধারণ ব্যবহার করার কারণে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কাস্টমসের দায়িত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে এনবিআরের পত্রে স্বীকার করা হয়েছে। পত্রে আরও বলা হয়, ‘আমদানি হওয়া স্কিন ব্লিচ ক্রিম পরীক্ষা করে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক মার্কারি পেয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এরপরও ওই পণ্য কেন নিলামের মাধ্যমে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিলাম লটভুক্ত করা হয় (নিলাম লট নম্বর—১৪/১৪)- তা আইসিডি কাস্টমস হাউসকে তদন্ত করতে হবে এবং মতামত জানাতে হবে।’ এ প্রসঙ্গে কমলাপুর আইসিডি কাস্টম হাউসের কমিশনার ফারজানা আফরোজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখানে রাজস্ব ফাঁকির কোনো বিষয় নেই।

সর্বশেষ খবর