মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
কমছে না হজ যাত্রীদের দুর্ভোগ

মক্কায় হোটেলে আগুন ৬০০ হজযাত্রী স্থানান্তর

মোস্তফা কাজল, ঢাকা ও মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব

কোনোভাবেই কমছে না যাত্রীদুর্ভোগ। যাত্রী সংকট ও ই-ভিসা জটিলতায় শেষ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার হজযাত্রীর হজ পালন অনিশ্চিত থেকেই যাচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ হজযাত্রীর মধ্যে ১ লাখ ২৬ হাজার ২০৫ জনের ভিসা হয়েছে। ফলে ৯৯৩ জনের ভিসা শেষ পর্যন্ত ইস্যু হয়নি। এদিকে গতকাল মক্কায় একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ওই হোটেল থেকে প্রায় ৬০০ হজযাত্রীকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। গতকাল দুপুরের পর থেকে সৌদি সরকার হজের ই-ভিসা ইস্যুকরণ কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া ফ্লাইট সংকটের সমাধান না হওয়ায় ৬টি হজ ফ্লাইটের শিডিউল এত সংক্ষিপ্ত সময়ে ঠিক রাখা যাবে কিনা সংশয় দেখা দিয়েছে। এ ৬ ফ্লাইটের যাত্রীসংখ্যা ২ হাজার ৫১৪। এভাবেই ৩ হাজার ৫০৭ জনের হজে গমন শতভাগ নিশ্চিতের পথে। গতকালও বিমানের একটি ফ্লাইট রি-ডিশিউলিং করে ২৬ আগস্ট করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি হজ ক্যাম্পে অর্ধশত হজপ্রত্যাশী ভিসা ও টিকিট না পেয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। জানতে চাইলে হজ ক্যাম্প পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৯৯৩ জনের হজ ভিসা হয়নি। এ ছাড়া ৬টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা নিয়ে জটিলতা থেকেই গেছে। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের ২৯ হজ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। ফলে বাতিল হওয়া হজ ফ্লাইটের কারণে ৪ হাজার হজযাত্রীর হজ পালনে অনিশ্চয়তা থেকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এত কম সময়ে নির্ধারিত হজ ফ্লাইটের বাইরে সমসংখ্যক ৪টি করে ফ্লাইটে যাত্রী পাঠানো হচ্ছে। এ কারণে শেষ পর্যন্ত সব হজযাত্রী পরিবহন নিয়ে শঙ্কায় আছে বিমান, হজ অফিস ও হজ এজেন্সিগুলো। এ ছাড়া হজের কারণে জেদ্দা বিমানবন্দরে ২৯ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভিআইপি বহন করা উড়োজাহাজ ছাড়া সব ধরনের উড়োজাহাজ অবতরণ নিষিদ্ধ করেছে সৌদি আরব সরকার। সংকট কেন— জানতে চাইলে হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ—হাব মহাসচিব মো. শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, ‘সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আমাদের সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিপ্লেসমেন্ট কোটা শেষ পর্যন্ত শতকরা ১৫ ভাগে উন্নীত করা হয়েছে। প্রতি বছরই নানা কারণে কিছু লোক হজে যান না। অনেকে যেতে পারেন না। এবার ২০ জন সরকারি কোটায় টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু হজে যাচ্ছেন না। তাদের মতো বেসরকারি কোটায়ও কিছু আছেন। তারাও হজে যাবেন না। তবে কোনো হজ এজেন্সির গাফিলতির কারণে কোনো ব্যক্তি হজে যেতে না পারলে সেই হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে হাব।’

মক্কার হোটেলে আগুন : হজ সামনে রেখে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মক্কায় অবস্থান করছেন। মক্কার বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগিতে সময় পার করছেন তারা। মক্কার নিকটবর্তী এলাকা আল-আজিজিয়ায় হজযাত্রীরা অবস্থান করছেন এমন একটি হোটেলে গতকাল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই হোটেল থেকে প্রায় ৬০০ হজযাত্রীকে সরিয়ে নেন হজের সময় জরুরি সেবাদানকারী সদস্যরা। তবে অগ্নিকাণ্ডে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

সরিয়ে নেওয়া ৬০০ জন তুরস্ক ও ইয়েমেনের নাগরিক বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করা হলে ওই হোটেলে কোনো বাংলাদেশি ছিলেন না বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানানো হয়। অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মক্কার বেসামরিক প্রতিরক্ষা অধিদফতরের মুখপাত্র মেজর জেনারেল নায়েফ আল-শরিফ জানান, ‘১৫ তলা হোটেলটির অষ্টম তলার একটি কক্ষের এসি থেকে আগুনের সূত্রপাত। তিনি আরও জানান, হোটেলের সব অতিথিকে উদ্ধার করা হয়েছে। কোনো ধরনের হতাহত ছাড়াই আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।

সর্বশেষ খবর