বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

জেলায় জেলায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া

কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও জামালপুরে চলছে ত্রাণ বিতরণ

রুহুল আমিন রাসেল, বাদল নূর ও রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট থেকে

জেলায় জেলায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া

লালমনিরহাটে গতকাল ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের ত্রাণ বিতরণ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের বন্যাকবলিত বিভিন্ন জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ। গতকাল দিনভর বন্যা উপদ্রুত কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও জামালপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কণ্ঠ, স্যাটেলাইট টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোর, ডেইলি সান, বাংলানিউজ ও রেডিও ক্যাপিটালের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। লালমনিরহাটের সদর উপজেলায় ত্রাণ পেয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা মানুষগুলো বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন, হামার যে কি উপকার করিল বাহে এই বসুন্ধরা গ্রুপ। ক’দিন থ্যাকি এক বেলা খ্যায়া দিন কাটছ্যালো হামার। আজ থ্যাকি হয়ত দুটা দিন পেঠভরি খাবার প্যামো, বসুন্ধরার দেওয়া শাড়ি লুঙ্গি পেয়েও দুর্গত মানুষেরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ত্রাণ নিতে আসা রমিছন বেওয়া (৭২) ত্রাণ হাতে নিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে বললেন, ‘তিন দিন থ্যাকি না খ্যায়া আছি, মোর যে কি উপকার হইল বাহে? এক নাতি চার দিন ভাতের জন্যেই শুধুই কানদে। মাটির মধ্যে যেটায় প্যায় সেট্যাই তুলি মোকত দ্যায়, ঘরত খ্যাবারও নাই, ট্যাকা পয়সাও নাই, কি দিয়্যা চাইল কেনং, সোমবার আইতত এক সাংবাদিক আসিয়া এ্যাকান সিলিপ দিয়া কইল, ক্যাইলকা ইলিপ দেয়া হইবে, সেই ইলিপ আইজকা পানু। আইজক্যা মুই খুব খুশি, বান্দোত যেয়্যা ভাত আন্ধি প্যাট ভরে খ্যাইম।’ বন্যায় সর্বস্ব হারিয়ে বাঁধে আশ্রয় নেওয়া বৃদ্ধ আজগর আলীও ত্রাণ হাতে পেয়ে খুশিতে কেঁদে ফেলে জানালেন, খালি শুনি ইলিপ দেওয়া হয়, হামরা কোন ইলিপ পাই না, বসুন্ধরা গ্রুপের এই ত্রাণই এই বন্যায় প্রথম পেলাম। সকাল সাড়ে ১০টায় জেলার সদর উপজেলার চরকুলাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ১ হাজার ৫০০ বানভাসি মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ পেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে থাকা অনেক বানভাসি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বসুন্ধরা গ্রুপের সাফল্য কামনা করেন। তারা বলেন, ১০ দিন থেকে বন্যায় আমাদের নানা কষ্টে দিন কাটলেও জেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা বিএনপি ছাড়া তেমন কেউই আমাদের ত্রাণ দেয়নি। যেটুকু দিয়েছে তা দিয়ে দু-একটা দিন গেলেও আমাদের দিন কাটছে নানা কষ্টে। কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলীর সভাপতিত্বে লালমনিরহাটে ত্রাণ বিতরণ উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজাউল আলম সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত কুমার রায়, জেলা পরিষদ সদস্য সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক আলতাফুর রহমান আলতাফ, মেহেদী হাসান জুয়েল, আমিনুর রহমান, মনিরুজ্জামান সরকার, সাহানুর রহমান প্রমুখ।

কুড়িগ্রাম থেকে সাইফুল আলম তুহিন জানান, কুড়িগ্রামের বন্যাকবলিত কাঁঠালবাড়ী ও হলোখানা ইউনিয়নে নয় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে খাদ্য ও কাপড় বিতরণ করেছে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ। গতকাল বিকালে হলোখানা মণ্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাল, চিঁড়া, গুড়, বিস্কুট, ওষুধ, স্যালাইন, শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিন আল পারভেজ, প্রবীণ শিক্ষাবিদ খায়রুল আনম, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ প্রমুখ।

জামালপুর থেকে শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্ ও শফিক জামান জানান, বন্যাকবলিত মানুষের সহযোগিতায় হাজার হাজার ত্রাণের ব্যাগ নিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চল জামালপুরের মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছুটে যায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের কর্মীরা। বসুন্ধরার এসব ত্রাণের ব্যাগ পেয়ে মহাখুশি বন্যাকবলিত অসহায় মানুষরা। আর এই সাহায্য পেতে নদী পাড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উন্মুখ হয়ে বসেছিলেন দুর্গতরা। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় গ্রুপের কর্মীরা দিনভর উপস্থিত থেকে সব হারানো অসহায় বানভাসি মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন চাল, চিঁড়া, গুড়, বিস্কুট, ওষুধ, স্যালাইন, শাড়ি-লুঙ্গি। ত্রাণ পেয়ে ভীষণ খুশি অভাবী মানুষগুলো জানাল, গত এক সপ্তাহের মধ্যে কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি। হাজার হাজার অসহায় বন্যার্ত মানুষ এই সাহায্য পেয়ে বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন জামালপুরের বন্যাকবলিত মানুষ। যমুনা তীরবর্তী এলাকা চরনাদাগাড়ির ঠাণ্ডুমিয়া বলেন, ভাইরে হামরাতো কোনো মাল-টাল পাই না। যমুনার পানিতে বাইসা যাবানছি। কেউ এডটু দেহেনা। আইজ আন্নেরা আইলেন হুইন্না খুব খুশি হইছি। আটাত্তুরচর এলাকার সখি বিবি বলেন, হামরাতো বানভাসি মানুষ, হামাগোর কেউ খবর লয়না। আন্নেরা আইয়া হামাগোর খবর নিলেন। এমনই আকুতি এসব বানভাসি সাধারণ মানুষের। এখানে ত্রাণ নিতে আসা মানুষের অনেকেই এবার বন্যায় একটুও ত্রাণ পায়নি। বিকালে মাদারগঞ্জের খরকাবিল দিয়ে ত্রাণ বোঝাই নৌকা এসে পৌঁছলে বানভাসি সাধারণ মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েন। নৌকার চারপাশে লাইন ধরে দাঁড়ান একটু ত্রাণের আশায়। এ সময় বন্যাকবলিত এসব মানুষ নিজেদের মাঝে প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেন কার আগে কে নিবেন ত্রাণ। তবে মাদারগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির ও তার কাউন্সিলরদের সহযোগিতায় শৃঙ্খলার সঙ্গে এসব ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মাদারগঞ্জ বিআরডিবির চেয়ারম্যান অরুন কুমার সাহা, পৌর প্যানেল মেয়র শওকত আলী প্রমুখ। অপরদিকে ইসলামপুর উপজেলা এলাকায় উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ, সেনায়ারপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বাদল। মাদারগঞ্জ উপজেলার মাদারগঞ্জ পৌরসভা, চরপাকেরদহ, কড়ইচড়া, গুনারিতলা, বালিজুড়ী, জুড়খালী, আদারভিটা, সিধুলী ইউনিয়নের হাজার হাজার বানভাসি মানুষকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।

বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ কমছে না : দেশের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনো অনেক স্থানে বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। গাইবান্ধায় করতোয়া ছাড়া সব নদ-নদীর পানিই বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। কুড়িগ্রামে বন্যাকবলিত এলাকার ১৪০ কিলোমিটার কাঁচা ও ২৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং ব্রিজ-কালভার্ট বিধ্বস্ত হওয়ায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। নষ্ট হয়ে গেছে ৫০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন। বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলে বর্তমানে শুরু হয়েছে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। বিশেষ করে শিশুদের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। মুন্সীগঞ্জে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। প্রবল স্রোতে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে ও রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে। সিরাজগঞ্জে বন্যায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। অনেক স্থানে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— গাইবান্ধা : প্রতিদিনই কমছে ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়ার পানি। এর মধ্যে করতোয়া ছাড়া সবকটির পানিই বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে করতোয়ার পানি কমলেও তা বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। এদিকে পানি কমলেও মানুষের দুর্ভোগ কমছে না। গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ, সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের ৩৭৪টি গ্রামের ৪ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। ফুলছড়ি ও সাঘাটার ব্রহ্মপুত্র বাঁধে আশ্রয় নেওয়া বন্যার্তরা জানান, তাদের হাতে কোনো কাজ নেই। নগদ টাকার অভাবে খাদ্যও কিনতে পারছেন না। সরকারি-বেসরকারি সাহায্যও খুবই কম। জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল জানান, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তাদের চিকিৎসার জন্য ৩৭টি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করছে। কুড়িগ্রাম : পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দুর্গতরা ঘরে ফিরতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি তাদের। তবে ঘরে ফিরতে পারছে না বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া ঘরবাড়ির কয়েক শ পরিবার। ৯ উপজেলার ৬২ ইউনিয়নে দুর্গত মানুষের মাঝে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও প্রয়োজন মিটছে না দুর্গতদের। বন্যাকবলিত এলাকার ১৪০ কিলোমিটার কাঁচা ও ২৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং ব্রিজ-কালভার্ট বিধ্বস্ত হওয়ায় ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা। নষ্ট হয়ে গেছে ৫০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগ। বগুড়া : যমুনার পানি কমলেও বাঙালি নদীর পানি বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

 বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যায় ৫ উপজেলার ২১ ইউনিয়নের ১৯৫ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারিয়াকান্দি, ধুনট, সোনাতলা, শিবগঞ্জ ও নন্দীগ্রাম উপজেলার দেড় লাখ মানুষ এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আছে। শুরু হয়েছে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব। বন্যাকবলিত এলাকায় পাতলা পায়খানা, জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের আক্রান্ত সংখ্যা বেড়েছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। মুন্সীগঞ্জ : পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। প্রবল স্রোতে নতুন করে ভাঙন ও রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে। বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে পৌঁছেছে। শরীয়তপুর : পদ্মার ভাঙন আর বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশাহারা হাজার হাজার মানুষ। পদ্মাপাড়ের আশপাশের প্রায় ২০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ২৬৫টি সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। গোখাদ্যসহ স্যানিটেশনের ব্যবস্থা না থাকায় মানবেতর জীবন কাটছে দুর্গতদের। সিরাজগঞ্জ : দুই দফা বন্যায় সিরাজগঞ্জে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ফসল ও শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে। ফসল হারিয়ে কৃষকরা বাকরুদ্ধ। সরকারের কাছে সার্বিক সহায়তা দাবি করেছেন তারা। সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের কৃষক হাসেন আলী জানান, ৫ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছিলেন। ২ বিঘা নষ্ট হয়ে গেছে। ৩ বিঘা জমির পাট জাগ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু প্রবল স্রোতে ভেসে গেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আরশেদ আলী জানান, বন্যায় প্রায় ২৮০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। মানিকগঞ্জ : জেলার ৬ উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে কৃষকের ১৭ হাজার হেক্টর বোনা আমন, ৬০০ হেক্টর রোপা আমন ও ১৪০ হেক্টর সবজি। পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাগল খামারি জানান, আগে কখনো ছাগল মেহগনি গাছের তিতা পাতা খায়নি। খাবারের অভাবে এখন ছাগল এই পাতা খাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ : শীতলক্ষ্যার পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ বার্তায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সরেজমিন দেখা গেছে নদীর বিভিন্ন ঘাটে পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থায় রয়েছে। এর আগে শীতলক্ষ্যার পানি সর্বোচ্চ রেকর্ড করা হয়েছিল ৬.৯৩ দাগে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন জানিয়েছেন, শীতলক্ষ্যার পানি এখন বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। খুব শিগগিরই পানি হ্রাস পাবে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম মজুমদার জানান, শীতলক্ষ্যার পানি বিপদসীমার ওপরে থাকলেও এখনো নারায়ণগঞ্জের কোথাও বন্যা হয়নি।

সর্বশেষ খবর