বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

ধর্ষণের বিচার চেয়ে ধর্ষণের শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার ধুনটে ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে ধর্ষিত হয়েছেন এক যুবতী। এ ঘটনায় বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর আদালতে উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। শুনানি শেষে আদালত অভিযোগ এজাহার হিসেবে নিতে থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে। মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক নম্বর আসামি ধুনটের মাঠপাড়া গ্রামের লিমন হোসেনের (২০) সঙ্গে প্রায় তিন মাস আগে মুঠোফোনে টাঙ্গাইলের এক নারীর প্রেমের সম্পর্ক হয়। ১৪ আগস্ট ওই নারী প্রেমের টানে লিমনের কাছে চলে যান। লিমন ওই নারীকে শেরপুর উপজেলার সকাল বাজার এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান এবং বিয়ের কথা বলে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। পরদিন সকালে লিমন ওই নারীকে তার নিজ গ্রাম ধুনট সদর ইউনিয়নের মাঠপাড়ায় নিয়ে যান। এরপর ওই নারীকে লিমন তার গ্রামের দুই বন্ধু ইবরাহিম হোসেন (২৪) ও মুকুল হোসেনের (২০) হাতে তুলে দিয়ে পালিয়ে যান। ইবরাহিম ও মুকুল ওই নারীকে একটি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যান। পরে ওই নারী বিচারের জন্য সন্ধ্যার দিকে সদর ইউপি চেয়ারম্যান লাল মিয়ার বাড়িতে যান। এ সময় লাল মিয়া এ অভিযোগের বিচার করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে ওই নারীকে তার বাড়িতে রেখে ধর্ষণ করেন। পরদিন সকালে ওই নারী ধুনট থানায় গিয়ে মামলা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত ওই নারী মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর আদালতে গিয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইমদাদুল হক থানার পুলিশকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন। অভিযোগের বিষয়ে ধুনট সদর ইউপি চেয়ারম্যান লাল মিয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আদালতে করা মামলার এক নম্বর সাক্ষী ইউসুফ আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় ১০-১২টি মামলা রয়েছে। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মাদকসহ ইউসুফ আলীকে কয়েকবার আটক করে পুলিশে দিয়েছি। ইউসুফ জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। ইউসুফ তার ভাড়া করা এক নারীকে দিয়ে এই মিথ্যা মামলা করিয়েছেন।’ ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান গতকাল বিকালে বলেন, ‘চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা করার কথা মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে আদালতের কোনো আদেশ এখনো পাইনি। পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি দাবি করেন, ওই নারী কখনো তার থানায় কোনো অভিযোগ নিয়ে যাননি। পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর