বিশ্ব ঐতিহ্য ও বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের আশপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকায় নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনের অনুমোদনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার এলাকায় কতগুলো শিল্প-কারখানা রয়েছে, ছয় মাসের মধ্যে এর তালিকা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। পরিবেশ সচিব, শিল্প সচিব, ভূমি সচিব ও পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে স্থাপিত শিল্প-কারখানা অন্যত্র স্থাপন বা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে সেভ দ্য সুন্দরবনের সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম এ রিট আবেদন করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
শুনানি নিয়ে আদালত রুলও জারি করে। সুন্দরবনের আশপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শিল্প-কারখানা স্থাপনের অনুমোদন কেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্টের প্রজ্ঞাপনের লঙ্ঘন হবে না এবং নতুন শিল্প-কারখানা কেন অপসারণ করা হবে না রুলে তাও জানতে চেয়েছে আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ সচিব, শিল্প সচিব, ভূমি সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ ১২ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুন্দরবনের চারদিকে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে সরকার ঘোষণা করে। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ৫ ধারার (১) ও (৪) উপধারার ক্ষমতাবলে সংরক্ষিত এ এলাকাকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে। এ প্রজ্ঞাপন অনুসারে সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার এলাকায় ভূমি, পানি, বায়ু ও শব্দদূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু গণমাধ্যমে খবর এসেছে, পরিবেশ অধিদফতর ইতিমধ্যে শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প করার জন্য অবস্থানগত ছাড়পত্র দিয়েছে। এসব শিল্প-কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ ও পরিবেশ আইন, ১৯৯৫-এর লঙ্ঘন।
