শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

‘বিআইএইচএসএইচ’-এ গণছাঁটাই, উত্তেজনা

আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বিআইএইচএসএইচ (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল) এ গণছাঁটাই চলছে। আর এই গণছাঁটাইকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বিআইএইচএসএইচ-এ। এ অবস্থায় যে কোনো সময় বড় ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। তারা বলছেন, কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিস ছাড়াই গণছাঁটাই চলছে। গণছাঁটাইয়ের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনাকেও পাত্তা দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ কর্মীদের মাঝে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল তা এখন ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় গণছাঁটাই। গতকাল পর্যন্ত অন্তত ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। ছাঁটাই তালিকায় আছেন আরও অন্তত ৫০ জন। চাকরিবিধি, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটির দাবি উঠলে পূর্বের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলমকে গণছাঁটাইয়ের জন্য বলা হয়েছিল। তবে আদেশ অমান্য করার কারণে তাকেই চলে যেতে বাধ্য করা হয়। ভুক্তভোগীদের একজন মসিউদ্দীন তারেক। বিআইএইচএসএইচ এর সাবেক সহকারী পরিচালক (স্টোর)। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাসপাতালের পরিস্থিতি দিনকে দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাই সম্মান বাঁচাতে নিজেই পদত্যাগ করে চলে এসেছি। জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে যুদ্ধ করার কোনো মানে হয় না। বিআইএইচএসএইচ প্রজেক্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, গত সাত মাস ধরে হাসপাতাল কমপোনেন্টে কোনো ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রমে আমি যাচ্ছি না। তাই এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। জানা গেছে, একের পর এক ছাঁটাইয়ের পর গত ৩০ এপ্রিল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে সাতজন অভিযোগ দায়ের করলে সিনিয়র সহকারী জজ সৈয়দ তফাজ্জল হাসান হিরুর আদালত গত ৩ মে বিআইএইচএসএইচ কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে এর জবাব দিতে বলেছিলেন। তবে গতকাল পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা জেলা জজ আদালতের শরণাপন্ন হয়। আগামী ২৭ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

সূত্র বলছে, গত ২০ জুলাই মো. মামুন নামের এক ল্যাব এটেনডেন্টকে ছাঁটাই করে কর্তৃপক্ষ। আবার শূন্য পদের বিপরীতে জনবলও নিয়োগ দেয়। এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ ভূইয়া বলেন, ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত আগেই ছিল। আমি জয়েন করে বাস্তবায়ন করেছি মাত্র। এ ছাড়া যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তারা চুক্তিভিত্তিক ছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে। বাদী পক্ষের আইনজীবী তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ২০ থেকে ২২ বছর চাকরির পর কোনো একজন কর্মীকে বিনা নোটিসে চাকরিচ্যুত করা মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। আদালতের শোকজকেও বিআইএইচএসএইচ কর্তৃপক্ষ পাত্তা দেয়নি। পরে জেলা জজ আদালতে আমরা শূন্য পদে নিয়োগ বন্ধে এবং ছাঁটাইকৃতদের পুনর্বহাল নিয়ে আপিল করেছি।

সর্বশেষ খবর