সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রস্তুতি শুরু গাবতলী পশু হাটের

মোস্তফা কাজল

পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র চার দিন বাকি। এরই মধ্যে রাজধানীর গাবতলীর হাট অনেকটা জমে উঠেছে। এ হাটে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে আসছে কোরবানির গরু-ছাগলসহ অন্যান্য পশু। এসব পশু সবচেয়ে বেশি আসছে কুষ্টিয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ থেকে। গতকাল সকালে এ হাটে গিয়ে কিছু ভারতীয় বড় বড় গরু দেখা গেছে। হাট ইজারাদার জানান, রাজধানীর উপকণ্ঠের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ৪ থেকে ৫ হাজার গরু, ছাগল ও মহিষ গত ২৪ ঘণ্টায় হাটে তোলা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকেন ক্রেতারা। সাধারণত কোরবানি ঈদের এক সপ্তাহ আগ থেকে গাবতলীর এ হাটে পাইকারি বেচা-বিক্রি শুরু হয়। হাট ইজারাদার প্রতিনিধি লাল মিয়া বলেন, এবার আগাম বন্যার কারণে অনেক গৃহস্থ বাধ্য হয়ে গরু হাটে তুলেছেন। গতকাল বিকাল পর্যন্ত এ হাটে অর্ধশত গরু ও ছাগল বিক্রি হয়। হাট ঘুরে আরও দেখা গেছে, ভারতের কয়েকটি উটও উঠেছে। আরও উঠছে চোখে পড়ার মতো বড় বড় কয়েকটি ষাড়। এসব ষাড়ের দাম হাঁকা হচ্ছে তিন থেকে চার লাখ টাকা। ইজারাদার আরও জানান, এ হাটে কোরবানি হাটের প্রস্তুতি শুরু হয় ঈদের ২০ থেকে ২২ দিন আগে থেকে। ফলে বিগত বছরের মতো এবারও জমে উঠছে হাট। চলতি সপ্তাহে এ হাটের পরিসর দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বাড়ানো হবে। কারণ হাটে সবেমাত্র কোরবানির পশু আসা শুরু হয়েছে। মূলত হাট জমে কোরবানির ৩ থেকে ৪ দিন আগে। সরেজমিন দেখা যায়, মূল হাটের বাইরে ঈদের সময় পশু রাখার জায়গাগুলোতে বর্তমানে ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান, রিকশা রাখা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও আবর্জনার বিশাল স্তূপ সরানোর কাজে ব্যস্ত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৪ এর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। এ ছাড়া হাটের তিন পাশে তৈরি করা হয়েছে ইজারা কাউন্টার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণকক্ষ ও নজরদারি টাওয়ার। হাটের ভিতরের সড়ক পরিষ্কার, অপ্রয়োজনীয় কাদামাটি অপসারণ করা হচ্ছে। গণশৌচাগারের আশপাশে মাটি ফেলে এরই মধ্যে তা ব্যবহার উপযোগী করেছে কর্তৃপক্ষ। এদিন হাটে ক্রেতা উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। হাটে পাইকাররাও গরু উঠানো শুরু করেছেন। মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা থেকে আসা পাইকার আবদুল খালেক বলেন, এ হাটে পাইকারি বিক্রি হয় বলে তিনি বড় ও ছোট মিলিয়ে ১৪টি গরু তুলেছেন। বিকাল পর্যন্ত তিনি একটি ছোট গরু বিক্রি করতে পারায় বেশ খুশি। গাবতলী পশুর হাট ইজারাদার লুত্ফর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে এবার আমরা ১০টি কাউন্টার তৈরি করেছি। এ ছাড়া যে কোনো রোগাক্রান্ত গরু যাতে হাটে ঢুকতে না পারে সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। ক্রেতাদের সহযোগিতার জন্য দেড়-শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক আজ থেকেই কাজ শুরু করবে। তাদের দেওয়া হবে আলাদা পোশাক, যাতে দেখলেই চেনা যায়। পশুর হাটের কয়েকজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের মূল হাট কাল থেকে শুরু হবে। কারণ,  কোরবানির পশু কিনে রাজধানীবাসীদের তেমন রাখার জায়গা নেই। তাই কোরবানির আগে আগেই পশু কেনেন তারা। এ কারণে রাজধানীবাসীর জন্য এখনো কোরবানির পশু আনতে শুরু করেননি বিক্রেতারা। তবে আজকাল থেকে তারা রাজধানীবাসীর জন্য হাটে গরু-ছাগল নিয়ে আসা শুরু করবেন। কারণ বেশি আগে আনলে খরচ বেড়ে যায়, তাই শেষ দিকে আনার প্রতি দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর