মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

আশুগঞ্জে ফিলিং স্টেশনের ছাদ ধসে চার শ্রমিক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে গতকাল দুপুরে নির্মাণাধীন ফিলিং স্টেশনের ছাদ ধসে চার নির্মাণশ্রমিক নিহত ও কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন জেলার সরাইল উপজেলার তেরাকান্দার মিজান মিয়া (৩৫), আশুগঞ্জের যাত্রাপুরের নাজমুল (২৫), দুলাল মিয়া (৫০) ও সদর উপজেলার সাদেকপুরের আবু সায়েদ (৪০)। নির্মাণকাজ করার সময় ছাদ ধসে পড়লে তারা নিহত হন। উদ্ধারকাজ সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। তবে কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে সন্ধ্যা নাগাদ নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি। লাশ দাফনের জন্য নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহাদুরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জেলা সার সমিতির সভাপতি জালাল উদ্দিনের সায়েরা ফিলিং স্টেশন ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। ঢালাইয়ের কাজ শেষে আট-নয় জন শ্রমিক ছাদের নিচে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দে ঢালাইসহ সম্পূর্ণ ছাদ শ্রমিকদের ওপর ধসে পড়ে। এতে আটকা পড়েন হতাহতরা।

এলাকাবাসী তত্ক্ষণাৎ ভবনের নিচে আটকেপড়া আশুগঞ্জের যাত্রাপুর গ্রামের শিপন মিয়া (২৮), রিপন মিয়া (৩০), হানিফ মিয়াকে (৩৫) উদ্ধার করে স্থানীয় ডে-নাইট হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে গিয়ে ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এ কাজে তারা আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্রেনসহ বিভিন্ন ভারী যান ব্যবহার করে। ঘটনার পর ফিলিং স্টেশনের মালিক জালাল উদ্দিন গা ঢাকা দিয়েছেন। এদিকে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. সামসুল হক, র‍্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার শেখ নাজমুল আরেফিন পরাগ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন, আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বদরুল আলম তালুকদার ঘটনাস্থলে ছুটে যান। স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আশুগঞ্জের ইউএনও আমিরুল কায়ছার জানান, ‘উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আর কেউ নেই। কীভাবে এ ঘটনা ঘটল সে বিষয়ে তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হবে। নিহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. শারফুল আহসান ভূইয়া জানান, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বেলা আড়াইটায় ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট উদ্ধারকাজ শুরু করে। এ সময় ধ্বংসস্তূপ থেকে চারজনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেছেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আর কোনো হতাহত না থাকায় সন্ধ্যা ৬টায় উদ্ধারকাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সামসুল হক জানান, ‘উদ্ধারকর্মীরা চারজনকে উদ্ধার করেছেন। এ চারজনকেই হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি শিগগিরই গঠন করা হবে এবং জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

 

সর্বশেষ খবর