বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফিলিপাইন ও ফেডকে ছয় মাস সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ

রিজার্ভ চুরি

মানিক মুনতাসির

ফিলিপাইন ও ফেডকে ছয় মাস সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ

নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমে (ফেড) গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভের বাকি অর্থ ফেরত দিতে ছয় মাস সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ অর্থ ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা না করলে ফেড এবং ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরতে গঠিত সরকারের উচ্চপর্যায়ে টাস্কফোর্সের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠান দুটিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মহাব্যবস্থাপক দেবপ্রাসাদ দেবনাথ এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কিছু বিষয়ে অগ্রগতিও হয়েছে। এ বিষয়ে তারা আমাদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মামলা না করার জন্য তারা অনুরোধ করেছে। এ ব্যাপারে আমরা তাদের ছয় মাসের সময় দিয়েছি। অর্থবিভাগ সূত্র জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় এর আগে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিকবার দায় এড়াতে চাইলেও সম্প্রতি দেশটি বাংলাদেশকে জানিয়েছে তারা অর্থ উদ্ধারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহায়তা দেবে। তবে শর্ত জুড়ে দিয়েছে আপাতত বাংলাদেশ যেন আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা না করে। কেননা মামলা করলে বিষয়টি পুরোপুরি আদালতের ওপর ন্যস্ত হয়ে পড়বে। তখন ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলেও প্রয়োজনীয় সহায়তা বাংলাদেশকে দিতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী আগামী ছয় মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা না করলে পরবর্তীতে বাংলাদেশ আর মামলা করার সুযোগ পাবে না। ফলে সে সময়ের আগেই রিজার্ভের অর্থ ফেরত এবং হ্যাকারদের সব ধরনের তথ্য জানতে চীন এবং ফিলিপাইনের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। চুরি হওয়া রিজার্ভের একটা বড় অংশ চীনের ক্যাসিনো জাংকেটে খরচ করা হয়েছে এমন তথ্যও বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনের গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এ জন্য ঘটনা তদন্তে এবং জড়িতদের তথ্য জানতে চীন সরকারের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। দেশটি বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তা দিতেও সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে। এর সঙ্গে চীনের যে দুজন হ্যাকারের যুক্ত থাকার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তা যাচাই করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ফিলিপাইন বাংলাদেশকে মামলা না করার অনুরোধ জানিয়েছে। পাশাপাশি দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আবারও জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে, তারাও দায় এড়াতে পারেন না। তাদের তথ্য চেয়েছে ফিলিপাইন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এ ধরনের তথ্য ফিলিপাইনকে সরবরাহ করা হবে না। এর আগে ফিলিপাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল, চুরি হওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার (প্রায় ৮০০ কোটি টাকা) থেকে দেড় কোটি ডলার ফেরত এলেও বাকি ৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার কোথায় রয়েছে তার কোনো হদিস এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। আর তা উদ্ধারের সম্ভাবনা জাগাতে হলে অবশ্যই হ্যাকারদের চিহ্নিত করতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক বা ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) দায়ী কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর