বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
গবেষণা প্রতিবেদন

কাঠ-কয়লায় রান্নার ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মা-সন্তান

মায়েরা মাতৃত্বজনিত সমস্যা শিশুরা নিউমোনিয়া শ্বাসকষ্টে ভুগছে

জিন্নাতুন নূর

বাংলাদেশে গ্রাম অঞ্চলে তো বটেই এমনকি মফস্বল ও শহরেও অনেক নারী এখনো ঘরের ভিতর রান্নার জন্য জ্বালানি হিসেবে সলিড ফুয়েল বা কাঠ, কয়লা, গোবর, খড় ও কাঠের লাকড়ি ব্যবহার করেন। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে যেখানে গ্যাস সংযোগ নেই এবং এলপি গ্যাসের সংযোগ নেই সেখানে নারীরা রান্নায় এই সলিড ফুয়েল ব্যবহার করছেন। আর এর ফলে ঘরের ভিতর বায়ুদূষণ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক জার্নাল বায়ো মেড সেন্ট্রাল-এ ‘হাউসহোল্ড এয়ার পলিউশন ফ্রম কুকিং অ্যান্ড রিস্ক অব অ্যাডভারস হেলথ অ্যান্ড বার্থ আউটমস ইন বাংলাদেশ : এ নেশনওয়াইড পপুলেশন’ শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে। গবেষণা থেকে জানা যায়, কাঠ, কয়লা ও কাঠের লাকড়ির মতো জ্বালানি ব্যবহারের ফলে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের এক-পঞ্চমাংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এদের অনেকেই আবার শ্বাসকষ্টের সমস্যায় আক্রান্ত হয়। আর যেসব নারী এই রান্নার কাজে জড়িত থাকেন তারাও নানারকম রোগে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যকই গর্ভকালীন জটিলতা, যকৃতের সমস্যা, কাশির সমস্যায় আক্রান্ত হন। এ ছাড়া দেশের মোট রোগের ৪ শতাংশই এ কারণে হয়। আর জিডিপির হিসাবে মোট ক্ষতি হয় ৩ শতাংশ। জানা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৪ শতাংশ ঘরের মধ্যে রান্না করেন। আর এদের ১১ শতাংশই সলিড ফুয়েল ব্যবহার করেন। এই গবেষণাটি মোট ২২ হাজার ৭৮৯ জন বিবাহিত নারীর ওপর করা হয়। যার মধ্যে সলিড ফুয়েলের জন্য ১ হাজার ৯০ জন নারীর সন্তান পাঁচ বছর হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্যে ৭৪০ জন নারীর শিশু জন্মের এক মাসের মধ্যে মারা যায়। আর ৯৯০টি শিশুর মৃত্যু হয় জন্মের এক বছরের মধ্যে। এ ছাড়া ৫৬৪ জন নারী এর ফলে মৃত সন্তানের জন্ম দেন। আর ৫৪.৯ জন নারী গর্ভকালীন জটিলতায় ভোগেন। ১৭.৭ শতাংশ কম ওজনের সন্তান জন্ম দেন। আর ১.৪ শতাংশ মৃত সন্তান প্রসব করেন। অন্যদিকে ঘরের ভিতর সলিড ফুয়েল ব্যবহারের জন্য ২ হাজার ৪৬৮টি শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। ১৫ শতাংশ শিশুর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর