শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মার ভাঙনের তোড়ে নোঙর করা অবস্থায় তিনটি লঞ্চ ডুবে গেছে। গতকাল ভোরের এ ঘটনায় একই পরিবারের তিন যাত্রী ও ১২ জন লঞ্চ স্টাফ নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর ডুবুরি দল। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পানির তোড়ে নোঙর করা এমভি মৌচাক, নড়িয়া-২ ও মহানগর লঞ্চডুবে যায়। এ ঘটনায় নড়িয়া উপজেলার লুনশিং গ্রামের মোহাম্মদ আলী (৩৭) ও সরোয়ার হোসেন (৪০) নামে দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। উদ্ধার হওয়া যাত্রী মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী পারভিন বেগম (৩১), শাশুড়ি ফখরুন নেছা (৫০) ও চার দিনের নবজাতক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। এ ছাড়া লঞ্চের স্টাফ রবিন সরদার (২০), লিটন শেখ (২৫), মানিক মাদবর (৩৫), বসির (২৯), মো. রফিক (৫০), পলাশ (২০), সজল তালুকদার (৩০), জাকির হোসেন (৪৫), শাহ আলম (৩৫), সালাউদ্দিন (৩০), জয় (১৯) ও সাদেকের (২৫) সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ তিন যাত্রী ও ১২ লঞ্চ স্টাফ নিখোঁজের তালিকা করেছে। এদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন। উদ্ধার হওয়া মোহাম্মদ আলী জানান, ঢাকা থেকে এমভি মৌচাক লঞ্চে নড়িয়া উপজেলার লুনশিং গ্রামের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৩টার দিকে লঞ্চটি ওয়াপদা ঘাটে নোঙর করে। যাত্রীরা সবাই নেমে যায়। আমার সঙ্গে নবজাতক শিশু থাকায় ভোর হওয়ার অপেক্ষা করছিলাম লঞ্চে বসে।
হঠাৎ লঞ্চটি কীভাবে ডুবে যায় বুঝে উঠতে পারিনি। স্ত্রী, শাশুড়ি ও নবজাতককে বাঁচাতে না পারার আক্ষেপে তিনি মূর্ছা যাচ্ছেন বারবার। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, নদীভাঙনের কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণির কারণে লঞ্চগুলো ডুবেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অন্য কারণগুলোও আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন অধিদফতর ও বিআইডব্লিউটিএ আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি।
