বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
নওগাঁয় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু

১১ বছর পর বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর মান্দায় পুলিশ হেফাজতে মনোয়ারুল ইসলাম সাগর মৃত্যুর ঘটনার ১১ বছর পর বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার বিকালে  নওগাঁর অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জাহাঙ্গীর আলম ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জাহাঙ্গীর আলম তার চেম্বারে পাঁচজনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। সাগরের ছোট বোন ফাতেমাতুজ্জোহরা, তার স্ত্রীর বড় ভাই মঞ্জুরুল আলম ও নজরুল ইসলাম, প্রতিবেশী সুলাইমান আলী ও মাহবুব আলী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে মান্দার চৌবাড়িয়াহাটে সন্ত্রাসী হামলায় চার পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ওই বছরের ৬ সেপ্টম্বর পোরশা থেকে সাগরকে আটক করে পুলিশ। পরদিন ভোরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মান্দা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে। পরবর্তীতে ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সাগরের মা মর্জিনা আলম শাহ মান্দা থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদার রহমান, এসআই তোফাজ্জল হোসেন খান, এসআই শাকিল আহমেদ, পোরশা থানার ওসি আনিসুর রহমান, মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকতা আইয়ুব আলীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে নওগাঁ আমলি আদালতে (মান্দা) হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে ঘটনা তদন্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন। ২০১১ সালে সিআইডি আদালতে জমা দেওয়া তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে এ মৃত্যুকে অসুস্থতাজনিত মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করলে বাদীপক্ষ এর বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করেন। আসামি তোফাজ্জল হোসেন খানের করা একটি রিট মামলার আপিলের শুনানি নিয়ে রিটটি না মঞ্জুর করে ঘটনাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ গত ৩১ মে এ আদেশ দেন। আদেশ গ্রহণের ৬ সপ্তাহের মধ্যে এ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন রেজা বলেন, আসামি পক্ষ বেশ কয়েকবার মামলাটিকে বিলম্বিত করার জন্য হাইকোর্টে রিট করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই হাইকোর্ট তাদের আবেদন না মঞ্জুর করেছেন। সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ একটি রিট আপিলের শুনানি নিয়ে মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হলো।

সর্বশেষ খবর