বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের সার্টিফায়েড কপি জালিয়াতি

অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাই কোর্টের জাল সার্টিফায়েড কপি জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে সরবরাহের ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। নোয়াখালী জেলা পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন স্থগিত করতে এ জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে প্রার্থী ইমরুল চৌধুরীর আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘যেহেতু এ বিষয়ে আদালতের কোনো আদেশ নেই, তাই কোর্টের নামে জাল সার্টিফায়েড ব্যবহার করে তারা অপরাধ করেছে। সে জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আহমাদুল কবির ৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মুহাম্মদ রেজাউল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন, যার নম্বর ১২৮৪৬/২০১৭। এর আইনজীবী ছিলেন জনাব জাফর ইমাম। ওই মামলায় বিজ্ঞ আদালতে আহমাদুল কবিরের পক্ষে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন। মামলায় বিজ্ঞ আদালত এই মর্মে মতামত প্রদান করেন যে, যেহেতু আগামী ১০ তারিখ নির্বাচন তাই ৭ তারিখে আদালত কোনো অর্ডার পাস করবেন না। তখন ওই মামলার আইনজীবী নট প্রেস করেন।’ ধারণা করা হচ্ছে, আদালতে নিজের প্রত্যাশামতো আদেশ পেতে ব্যর্থ হয়ে প্রার্থী আহমাদুল কবির বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে তালিকাভুক্ত থাকা রিট পিটিশন (নম্বর ১২৮৪৬/২০১৭) ২৯.০৮.২০১৭ তারিখে জনৈক আবু নাসেরের ১৯ নম্বর রিট পিটিশনের নাম ব্যবহার করে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে হাই কোর্টের জাল সার্টিফায়েড কপি সরবরাহ করেন। প্রসঙ্গত, রবিবার স্থগিত নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাল সার্টিফায়েড কপিতে দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন এ কে এম ইমরুল চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের কথা উল্লেখ থাকায় রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন স্থগিত করেন। এর পরই কারণ অনুসন্ধানে নেমে প্রার্থী ইমরুল চৌধুরী জানতে পারেন, ওই সার্টিফায়েড কপিটি জাল। প্রতিপক্ষ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার জন্য এই অসাধু কৌশল অবলম্বন করেছেন। এর আগে প্রার্থী ইমরুল চৌধুরীর আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া জানান, আবু নাসের নামের এক ব্যক্তি হাই কোর্টে ওই রিটটি দায়ের করেন। পরে ২৯ আগস্ট আদেশের জন্য রিট আবেদনটি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চে কার্য তালিকাভুক্ত হয়। তবে বাদীর আবেদনে সন্তুষ্ট না হয়ে বিচারক রিটটি সেই দিনের কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। অথচ আদেশ দেওয়া হয়েছে এমন একটি জাল সার্টিফায়েড কপি তৈরি করে তা জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেওয়া হয়। সেখানে ওই নির্বাচনের দুজন প্রার্থীর মধ্যে এ কে এম ইমরুল চৌধুরীকে বাদ দেওয়া ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের আদেশ চার মাসের জন্য স্থগিতাদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।

সর্বশেষ খবর