বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
মাজারের খাদেম হত্যা

খুনিদের তিনজন ভাড়া বাড়িতে থেকে অটোরিকশা চালাতেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় অভিযুক্ত নয় আসামির মধ্যে তিনজন খাদেমকে হত্যার ছয় মাস আগে থেকে রংপুর নগরীর নূরপুর এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থেকে অটোরিকশা চালাতেন। গতকাল রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকারের আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ৫ সাক্ষীর মধ্যে দুজন এ কথা আদালতে জানান। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা বলেন, আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় নূরপুর এলাকা বাড়িওয়ালা আবদুল আজিজ কাঠগড়ায় থাকা আসামি ইসাহাক আলী, লিটন মিয়া ও সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুলকে শনাক্ত করে আদালতকে জানান, ‘২০১৫ সালের ২৬ মে তারা আজিজের বাসা ভাড়া নেন। সকালে তারা বের হয়ে যেতেন, ফিরতেন রাতে। ওই বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। পরে পুলিশ তার বাড়িতে তদন্ত করতে গেলে খাদেম হত্যার বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। আরেক সাক্ষী নূরপুর এলাকার অটোরিকশা গ্যারেজের মালিক আবদুল জলিলও ওই তিন আসামিকে শনাক্ত করে আদালতকে জানান, ‘ইসাহাক, লিটন ও সাখাওয়াতের একটি অটোরিকশা ছিল। সেটি চার্জ দেওয়ার জন্য তার গ্যারেজে রাখতেন। তারা পালা করে সেটি চালাতেন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তিনজনই অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারেন তারা মাজারের খাদেম হত্যার সঙ্গে জড়িত। আজিজ ও জলিল ছাড়াও গতকাল মামলার প্রধান আসামি জেএমবির রংপুর আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী এবং জেএমবি সদস্য আবু সাঈদের বাড়ির এলাকার বাসিন্দা জামসেদ আলী, মতিয়ার রহমান, আল ইমরানেরও সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। এ নিয়ে  এ মামলায় ৫১ জন সাক্ষীর মধ্যে মামলার বাদী খাদেমের ছেলে অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলামসহ ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ১২ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা নয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। পাঁচজন সাক্ষীর জেরা শেষে আদালত আগামী ১৮-২০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন। এ তিন দিন ছয়জন করে মোট ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে আইনজীবী রথীশ জানিয়েছেন। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের চৈতার মোড়ে মাজার শরিফের খাদেম রহমত আলীকে (৬০) ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার সময় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ছেলে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুন অর রশীদ গত বছরের ৩ জুলাই জেএমবির রংপুর আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রীসহ ১৪ জেএমবির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। দুই আসামির মৃত্যু হওয়ায় গত ১৬ আগস্ট রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার জেএমবির ১২ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর