শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী বিএনপিতে মুক্তাদির

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী বিএনপিতে মুক্তাদির

সংসদীয় রাজনীতিতে দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসন হিসেবে পরিচিত সিলেট-১ (সিটি করপোরেশন-সদর)-এ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন, সে দলই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করে। এজন্য এ আসনটিতে বাড়তি মনোযোগ দেয় প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। এ আসনে শক্তিশালী একক প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা থাকে তাদের। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলোচিত এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিপরীতে এখন পর্যন্ত একক প্রার্থী নিয়ে স্বস্তিতে রয়েছে বিএনপি।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে স্থানীয় কেউ এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে নেই। সিলেট-১ আসনের মধ্যে থাকা হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। রাজনীতিতে তাই এ আসনটি সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে। এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মুহিত বিগত সময়ে একাধিকবার বলেছেন, তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তবে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট-১ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করলে আমিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।’ এ ছাড়া অতিসম্প্রতি সিলেটে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবারও নির্বাচন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী। এদিকে সিলেট-১ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেন। নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করার চেষ্টায় তিনি যোগাযোগ রাখছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে। নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে।

এ ছাড়া এ আসনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। ইতিমধ্যে কয়েকবার তিনি এ আসনে নির্বাচন করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগীয় তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন মিসবাহ সিরাজ। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে তিনি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। এ তিনজন ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর হবিগঞ্জের মোহাম্মদ ড. ফরাস উদ্দিন ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার সিলেটের কাজীটুলার বাসিন্দা ছহুল হোসাইনও সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, শেষ মুহূর্তে এ দুজনের যে কাউকে প্রার্থী করে ‘চমক’ দেখাতে পারে আওয়ামী লীগ।

সিলেট-১ আসনে এখন পর্যন্ত বিএনপি থেকে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির প্রার্থী হিসেবে আলোচিত। সিলেট-১ আসনের সাবেক এমপি খন্দকার আবদুল মালিকের ছেলে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বর্তমানে নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অবশ্য এ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরীর নামও আলোচনায় ছিল। তবে তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ায় তাকে নিয়ে আলোচনা উবে গেছে। খন্দকার মুক্তাদির দীর্ঘদিন ধরে দলকে চাঙা ও ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া তার সামাজিক কর্মকাণ্ডও সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে। এদিকে জাতীয় পার্টির স্থানীয় পর্যায়ের কোনো নেতা সিলেট-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দৌড়ে নেই। তবে দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একাধিকবার সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। এমনকি সিলেটকে ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ উল্লেখ করে এখানে নির্বাচন করার প্রত্যাশা তার মুখে শোনা গেছে। এজন্য জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ধারণা করছেন, এরশাদই সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হতে পারেন। এরশাদ প্রার্থী না হলে সিলেট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও এরশাদের সাবেক উপদেষ্টা বাবরুল হোসেন বাবুল এ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন বলে কিছুটা গুঞ্জন রয়েছে।

সর্বশেষ খবর