শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

উন্নতমানের সেবা আছে, রোগী নেই

জয়শ্রী ভাদুড়ী

উন্নতমানের সেবা আছে, রোগী নেই

উন্নতমানের যন্ত্রপাতি, দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, স্বল্প খরচে টেস্টের ব্যবস্থা থাকলেও দেখা নেই রোগীর। শুধু এক দিন নয়, মহাখালী জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের প্রতিদিনের চিত্র এটি। এখানে দেশের অন্যতম উন্নতমানের প্যাথলজি থাকলেও মানুষের না জানার কারণে রোগী আসে না তেমন একটা। মহাখালী কাঁচাবাজারের পাশেই অবস্থান এই ইনস্টিটিউটের।

সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্যাথলজি রুমে একজন মাত্র রোগী আর তার সঙ্গে একজন স্বজন। ঘণ্টা পার হলেও দেখা নেই রোগীর। ল্যাব সহকারীরা জানান, টেস্ট করার জন্য সাধারণ মানুষ তেমন একটা এই ইনস্টিটিউটে আসে না। যারা জানে তারা অথবা তাদের পরিচিতরা আসে। ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন রোগী টেস্ট করাতে আসেন এখানে। হাসপাতালের প্যাথলজির মূল্য তালিকায় দেখা যায়, মলমূত্র পরীক্ষা ২০, গ্রাম স্টেইনিং ৩০, হিমোগ্লোবিন ৩০, ব্লাড ইউরিয়া ৫০, প্লেটিলেট ৫০, কলেস্টেরল ও ক্রিয়েটিনিনে ৫০, সিরাম বিলুরুবিন ৬০ ও সিরাম ইলেকট্রোলাইট ২৫০ টাকা। ডায়াবেটিস পরীক্ষার খরচও অনেক কম। গর্ভধারণ নিশ্চিত হতে মূত্র পরীক্ষায় খরচ হবে ৮০ টাকা। হেপাটাইটিস বি, বিভিন্ন হরমোনসহ রয়েছে বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ণয়ের টেস্ট। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে সবচেয়ে দামি পরীক্ষাটি অ্যান্টি-এইচসিভির খরচ পড়বে ৪৫০ টাকা। ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষাগারে ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি অ্যান্ড হেমাটোলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, সেরোলজি, ইমিউনোলজি ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ৫৬ ধরনের পরীক্ষা হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে চিকিৎসকসহ ১১০ জন টেকনোলজিস্ট যুক্ত রয়েছেন। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এখানে একনাগাড়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। হাসপাতালের মোট জনবল ৬৩০। রাজধানীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা মহাখালী। এর পাশে রয়েছে ‘সাততলা বস্তি’। সেবা না পাওয়া আর দালালের দৌরাত্ম্য নিয়ে যখন এত কথা সেখানে রোগীর জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচের রোকন ট্রেডার্সের মালিক আহমদ মিয়া বলেন, ‘এখানে ব্যবসা করছি বহুদিন হলো। কিন্তু জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যে প্যাথলজি আছে তা জানতাম না। মানুষজন তো ওখানে তেমন যেতে দেখি না। অল্প টাকায় যদি ভালো সেবা পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই যাব।’ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য পাশের মসজিদের ইমামকে নামাজের পর মুসল্লিদের জানানোর জন্য বলেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল বিলবোর্ডসহ লাগানো হয়েছে নোটিস। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আনিসুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের রয়েছে বিশ্বমানের ল্যাব ও দক্ষ চিকিৎসক। কিন্তু তেমন একটা রোগী আসে না। জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণে আমরা প্রচারপত্র বিলিসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। রোগীর চাপ সামলানোর মতো জনবল এবং সক্ষমতা আমাদের আছে।’

সর্বশেষ খবর