শিরোনাম
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কঠোর নিরাপত্তায় ৩০ হাজার পূজামণ্ডপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

কঠোর নিরাপত্তায় ৩০ হাজার পূজামণ্ডপ

কঠোর নিরাপত্তায় রাজধানীসহ সারা দেশের ৩০ হাজার পূজামণ্ডপ। র‌্যাব-পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপগুলো নিয়ে আসা হয়েছে অত্যাধুনিক ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায়। কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকলেও সব কিছুই আমলে নিয়ে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিদেশি নাগরিকসহ দেশের ভিভিআইপিরা যাবেন এমন সব মণ্ডপ নিরাপত্তা জালে ঘিরে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানিয়েছে, আশুরা এবং দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ সদর দফতর থেকে দুই দফায় চিঠি পাঠানো হয়েছে সবকটি জেলার পুলিশ সুপার এবং ইউনিট প্রধানদের কাছে। এরই মধ্যে কয়েক দফায় দেশের সবকটি এলাকার পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করছেন মাঠ প্রশাসন ও র‌্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা। সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে দফায় দফায় বৈঠক করে ঠিক করা হয়েছে নিরাপত্তা ছক। আশুরা এবং দুর্গাপূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত ২০ হাজার সদস্য মাঠ পর্যায়ে সতর্ক রয়েছে। তবে সরকারবিরোধী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর পাশাপাশি উগ্র-মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো যে কোনো সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে পারে বলে তথ্য রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। সূত্র বলছে, পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও র‌্যাবের ডগস্কোয়াড, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা ইউনিট সারা দেশের ৩০ হাজার মণ্ডপে সতর্ক পাহারায় থাকবে। এরই মধ্যে মণ্ডপগুলোর আশপাশ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়ানোর বিষয়ে চোখ রাখা হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এক্ষেত্রে র‌্যাব পুলিশ জিরো টলারেন্স অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৩৩১টি পূজামণ্ডপও কঠোর নজরদারির মধ্যে রয়েছে। প্রতিমা তৈরির স্থানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আগে থেকেই গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেছে। মহালয়া থেকে শুরু করে দুর্গাপূজার দশমী পর্যন্ত প্রতিটি স্থলে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, সামনের ধর্মীয় উৎসব কেন্দ্রিক গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে। যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা পুলিশ সাদা পোশাকে মাঠে তৎপর রয়েছে। গত শুক্রবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উত্যাপন পরিষদের বর্ধিত সভায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়ানোর বিষয়ে পুলিশ জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক কিছু চোখে পড়লেই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।  র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, দুর্গাপূজা ও আসন্ন আশুরা উপলক্ষে র‌্যাবের পক্ষ থেকেও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র‌্যাবের ডগ স্কোয়াডের পাশাপাশি বোম ডিসপোজাল ইউনিট সারা দেশে সতর্ক থাকবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে র‌্যাব প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, দেশের সবকটি পূজামণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবক দলের ছবিসহ তালিকা নেওয়া হয়েছে। মহানগরগুলোতে রাত ৮টার মধ্যে এবং মহানগরের বাইরে সন্ধ্যার মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জনের জন্য বলা হয়েছে। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপগুলোতে সিসিটিভি এবং আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য উদযাপন কমিটিদের বলা হয়েছে। নিয়মিত প্যাট্রলিংয়ের পাশাপাশি মণ্ডপগুলোতে সাদা পোশাকে পুলিশের সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর