শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইসির সঙ্গে সংলাপ

সেনার বিপক্ষে এনপিপি কমিটিতে নারী রাখাতে জমিয়তের ‘না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজনৈতিক দলের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার ‘বাধ্যবাধকতা’ চায় না জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, সেনাবাহিনী নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছে দলটি। এদিকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের সুপারিশ করেছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। দলটি একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার ও সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে মত দিয়েছে। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত ইসির সংলাপে দল দুটি এসব মত দেয়। এ ছাড়া সকাল ও বিকালের সংলাপে দুই দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয় ইসির কাছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। এ সময় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। জমিয়ত : সকালে ইসির সংলাপে ধর্মভিত্তিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। জমিয়ত ইসির কাছে ১৩ দফা দাবি পেশ করে। দাবিগুলোয় রয়েছে : কমিটিতে নারী সদস্যের বিলোপ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, সেনাবাহিনী নিয়োগ ও নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বৈঠকের পর জমিয়ত মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘৩৩ শতাশ নারী রাখার কোটা নির্ধারণ করাটা ইসির অনধিকারচর্চা। দলগুলো তার নিজেদের প্রয়োজনেই তা করবে।’ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে দলের সব স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নারী সদস্যের বিষয়ে লিখিত প্রস্তাবে দলটি বলছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বস্তরে নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা তথাকথিত প্রগতিশীল অনেক দেশেও নেই। দলগুলো নিজেদেরে স্বার্থে সর্বস্তরের আস্থা অর্জনে নিজেদের প্রয়োজনেই নারী সদস্য করা ও তাদের দলের বিভিন্ন পর্যায়ে অন্তর্ভুক্তি বা পদায়নে কাজ করবে। নইলে দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এ ব্যাপারে ইসির অতি উৎসাহ দেখানো বা অহেতুক বাধ্যবাধকতা আরোপের প্রয়োজন নেই। জমিয়তের পক্ষ থেকে বলা হয়, দলীয় সরকারের অধীনে অতীতের নির্বাচনে কারচুপি ও পেশিশক্তি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এ ছাড়া তফসিল ঘোষণার পর থেকে সেনা মোতায়েন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার, স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় ১ শতাংশ সমর্থনসূচক স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা বাতিলের প্রস্তাব রয়েছে দলটির। এনপিপি : নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের সুপারিশ করেছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। দলটি একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার ও সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে। বিকালের সংলাপে এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালুর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি অংশ নেন। এনপিপি চেয়ারম্যান ছালু বলেন, তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাবসহ ১৬টি প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাবে বলা হয় : নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্য থেকে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোয় যেসব দল অংশগ্রহণ করেছিল তাদের মধ্য থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনকালীন সরকারের সদস্য করা যেতে পারে। এনপিপির অন্য সুপারিশ হচ্ছে : ভোটে ঢালাওভাবে সেনা মোতায়েনের দরকার নেই; সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা; অনলাইনে মনোনয়পত্র জমা; অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা নির্বাচন করতে চাইলে নিবন্ধিত দলে তিন বছর সক্রিয় রাজনীতি করতে হবে; প্রবাসী ভোটাধিকার, নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কাজে বাধা না দেওয়া; নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের যোগ্যতা যাচাই; নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার না করা ইত্যাদি। ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে ২৪ আগস্ট নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু করে ইসি।

 

সর্বশেষ খবর