সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফেলানীর হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যের ফাঁসি দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেলানীকে হত্যাকারী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি চাইলেন নিহত ওই কিশোরীর বাবা নুরুল ইসলাম। একই সঙ্গে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত দালালদেরও বিচার দাবি করেন তিনি। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় নাগরিক পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্যরা কিশোরী ফেলানীকে নির্দয়ভাবে হত্যা করে। এরপর লাশটি দীর্ঘসময় কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে। সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক কমিটির        আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন কবি শামসুজ্জামান খান মিলন, আবু মহি মুসা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. হারুন-অর-রশিদ খান, নাগরিক পরিষদের নেতা এস এম রাফসানজানি প্রীতম প্রমুখ। ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়েকে চোখের সামনে গুলি করে হত্যা করেছে। মেয়েটি ‘পানি পানি’ বলে চিৎকার করেছে। কেউ তাকে এক ফোঁটা পানি দেয়নি। আমি চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারিনি। তাকে মেরে কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে ওরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেখতে দেখতে সাত বছর হয়ে গেল, ফেলানী হত্যার বিচার হয়নি। বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের কাছে আমি এ হত্যার বিচার চাই।’ নুরুল ইসলাম বলেন, আমি পেটের দায়ে ভারতে গিয়েছিলাম। ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছিলাম মেয়ের বিয়ের জন্য। কিন্তু তাকে বিয়ে দিতে পারিনি। তিনি বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার হবে। আমি আদালতের কাছে অমিয় ঘোষের ফাঁসি দাবি করছি। দালালদেরও শাস্তি চাই, যে দালালগুলো আমার মেয়েকে বিএসএফের হাতে তুলে দিয়েছিল। আমি ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফেলানীর হত্যাকারী ও দালালদের বিচার চাই। সংবাদ সম্মেলনে ফেলানী হত্যার বিচারের পাশাপাশি তার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ, ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে নিরাপদ সীমান্ত দিবসকে ‘ফেলানী দিবস’ পালন, কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের নাম ফেলানী সীমান্ত এবং ঢাকায় গুলশান এক নম্বর থেকে তেজগাঁও রাস্তার নাম ফেলানী সরণি করার দাবি জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়, এ বছর থেকে ‘ফেলানী দিবস’ পালন করা হচ্ছে। জাতীয়ভাবেও দিবসটি পালন করতে হবে। নাগরিক সমাজের পক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর ২০১৫ সালে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ফেলানী দিবস পালনের প্রস্তাব জাতিসংঘে উত্থাপন করতে হবে।

সর্বশেষ খবর