মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ত্রাণের জন্য এখন আর রাস্তায় হাহাকার নেই

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, কুতুপালং থেকে

রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে অনেকটাই শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। এখন আর হাজার হাজার শরণার্থীকে ত্রাণের জন্য রাজপথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে না। রাস্তার পাশে খোলা মাঠে কিংবা পাহাড়ের অদূরে সুবিধাজনক কোনো স্থানে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম করা হচ্ছে। ফলে রাস্তায় এখন আর ত্রাণের জন্য হাহাকার নেই।

এরই মধ্যে উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সড়কে কমে গেছে যানজট। হাটবাজারও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগুলো খুলতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই উখিয়া-টেকনাফে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। পরিবারের লোকজন রাস্তাঘাটে বেরুতে পারবে। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারবে।

গতকাল দুপুরে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনীর ত্রাণ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বেসরকারিভাবে আসা ত্রাণগুলো দ্বিতীয় দিনের মতোও গ্রহণ করে দাতাদের রসিদ প্রদান করা হচ্ছে। আগের দিন কি পরিমাণ ত্রাণ ও নগদ টাকা জমা পড়ে— তা হোয়াইটবোর্ডে লিখে রাখা হয়েছে। ত্রাণ দাতাদের মধ্য থেকেও দুই চারজনকে ত্রাণবাহী গাড়িতে যেতে দেওয়া হচ্ছে। আবার রান্না করা খাবার ও পচনশীল ত্রাণ সামগ্রী সেনাপ্রতিনিধি দিয়ে নির্ধারিত ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে আরও সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্যে গতকাল দুপুরে উখিয়া কলেজ ক্যাম্পাসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা মাঝিদের (দলনেতা) নিয়ে সমন্বয় সভা করেন ব্রিগেডিয়ার মোস্তাফিজ। এ সময় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কীভাবে ত্রাণ কার্যক্রম আরও সুচারুরূপে পরিচালনা করা যায় এবং প্রতিটি রোহিঙ্গার কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো যায়— সে ব্যাপারে মাঝি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতা কামনা করে সেনাবাহিনী। বিকালে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের দুর্গম উনছিপ্রাং এলাকায় অস্থায়ী রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। পরিদর্শন শেষে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মিয়ানমারের উসকানিতে সাড়া দিলে রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকটের বিষয়টি আড়াল হয়ে যেত। মিয়ানমারের হেলিকপ্টার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। একটা দেশ এটা করতে পারে না। আমরা ধৈর্য ধরেছি। তবে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছি। সীমান্ত সুরক্ষার জন্য যা করা প্রয়োজন সব করা হবে। আমরা আক্রান্ত না হলে কোনো অ্যাকশনে যাব না।’ বিজিবি প্রধান বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের হার কিছুটা কমেছে, পরিস্থিতিও আস্তে আস্তে শান্ত হয়ে আসছে। রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনার ব্যাপারেও শৃঙ্খলা আসা শুরু হয়েছে। সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে। তাদের জনবল ও লিডারশিপ দুটাই আছে। খুব শিগগিরই সব কিছু শৃঙ্খলায় চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি। তিনি বলেন, তারা (মিয়ানমার) আমাদের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। আগামী নভেম্বরে তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হতে পারে।

সর্বশেষ খবর