শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সংকট সমাধান করুন

—মির্জা ফখরুল

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, কক্সবাজার থেকে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো দলীয় রাজনীতি নয়, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ত্রাণ নিয়ে বা তাদের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে আমরা কোনো দলীয় রাজনীতি করতে চাই না। আমরা চাই জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে এ সংকটের সমাধান। কিন্তু সরকারের এ ব্যাপারে কোনো আন্তরিকতা নেই। তারা সমস্যার সমাধান কতটুকু সঠিকভাবে করতে চায়

সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে। অনেকে অনেক কথা বলছেন। আমরা সেই কথা বলতে চাই না। নোবেল পুরস্কারের কথা বলেছেন, অন্যান্য সুবিধার কথা বলছেন।’ গতকাল কক্সবাজার সার্কিট হাউস সড়কে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকালে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য বিএনপি মহাসচিব কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে কক্সবাজার যান। তিনি উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিদর্শন ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। উখিয়ায় সেনাবাহিনীর ত্রাণভাণ্ডারে দলের পক্ষ থেকে দুই ট্রাক ত্রাণসামগ্রীও জমা দেন মির্জা ফখরুল। সংবাদ সম্মেলনের পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। এরপর বিকালে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের গ্রামের বাড়ি কেরানীগঞ্জে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে। এ সময় গয়েশ্বর রায়সহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে রাতে তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দিরও পরিদর্শন করেন। কক্সবাজারে সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, আন্তরিকতার সঙ্গে সমস্যা সমাধান করুন। বিভেদ না করে, বিভক্তি না এনে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের সব অভ্যন্তরীণ শক্তিকে এক করে মিয়ানমারের চাপিয়ে দেওয়া এই সংকট মোকাবিলায় একটা জাতীয় ঐক্যের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। এটাই হচ্ছে আমাদের আহ্বান।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নেতা লুত্ফর রহমান খান কাজল, শরীফুল আলম, হারুনুর রশীদ হারুন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, মনিরুল ইসলাম চৌধুরী ইউসুফ, শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার, কক্সবাজার জেলা সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ত্রাণকাজে সেনাবাহিনী মোতায়েন করায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এটা অব্যাহত রাখুন। আমরা বলেছি, সেনাবাহিনীর কর্মপরিধি আরও বিস্তৃত করা প্রয়োজন। আমরা খবর পেয়েছি, পত্রিকায় বুধবার এসেছে প্রায় ১৪ হাজার শেড (আশ্রয়স্থল) নির্মাণ করা হবে তাদের (রোহিঙ্গা) অস্থায়ীভাবে আবাসনের জন্য। এর মধ্যে ৪ হাজার সেনাবাহিনীকে দেওয়া হচ্ছে, বাকি ১০ হাজার সরকার তৈরি করবে। আমরা জানি, এ সরকার কীভাবে নির্মাণ করবে সে সম্পর্কে দেশবাসীর ধারণা তৈরি হয়ে গেছে। আমাদের দাবি, সেনাবাহিনীকে এ কাজের সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা হোক।’ একই সঙ্গে মিয়ানমারকে সমর্থনকারী রাশিয়া, চীন ও ভারতে বিশেষ দূত প্রেরণের পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের (রাশিয়া, চীন, ভারত) পরিস্থিতি বুঝিয়ে এ সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো হোক। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে ভারত, চীন ও রাশিয়া যাওয়া উচিত তারা যেন কোনো নেতিবাচক অবস্থান না নেয়। আমরা নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় যেন রাশিয়া ও চীন ভেটো দিতে না পারে সেজন্য কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করার আহ্বানও জানিয়েছি। এজন্য বিশেষ দূত পাঠানোর কথাও বলেছি।’

সর্বশেষ খবর