সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নাছিরকে খোলা চিঠি সাবেক মেয়র মনজুর আলমের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম


নাছিরকে খোলা চিঠি সাবেক মেয়র মনজুর আলমের

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নতুন ধার্যকৃত গৃহকর পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে চিঠি দিয়েছেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম। গতকাল দুপুরে সাবেক মেয়রের একজন প্রতিনিধি চিঠিটি চসিকের ডেসপাস শাখায় দেয়। এর আগে গত বুধবার সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীও গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের অনুরোধ জানিয়ে মেয়রকে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘আমি দায়িত্বগ্রহণকালে এক লাখ ২৫ হাজার হোল্ডিংয়ের বিপরীতে গৃহকর ধার্য ছিল ১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। পরে সাধারণভাবে এসেসমেন্ট করার পর ১ লাখ ৫৭ হাজার হোল্ডিংয়ের বিপরীতে গৃহকর হয় ১২০ কোটি টাকা। তা ছাড়া ওই এসেসমেন্টকালে যে ২ হাজার কোটি টাকা ভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে ৩৪৭ কোটি টাকা নির্ধারণ হয়েছিল, পরবর্তীতে আপিল নিষ্পত্তির মাধ্যমে তা ১২০ কোটি টাকায় স্থির হয়। বর্তমানে চসিকের হোল্ডিং সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার। বেড়েছে প্রায় ২৮ হাজার হোল্ডিং।’ সাবেক মেয়র বলেন, ‘বর্তমানে ভাড়ার ওপর ভিত্তি করে গৃহকর নির্ধারণ করায় মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। আপনি বৃহত্তম একটি দলের চট্টগ্রাম নগরের সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ফলে আপনার দায়িত্বকালে সরকারের ভাবমূর্তি অনেকটা উজ্জ্বল হবে। তাই আপনার নিকট বিনীতভাবে অনুরোধ, যে পদ্ধতিতে কর নির্ধারণ করা হয়েছে তা একটু সজাগ দৃষ্টিতে পর্যালোচনা করলে নগরবাসী উপকৃত হবেন। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণের হোল্ডিং ৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। তারা কর নির্ধারণ করেছে আয়তনের ভিত্তিতে। প্রতি বর্গফুট ৪ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে ধার্যকৃত করের পরিমাণ ১২ শতাংশ। পক্ষান্তরে চসিক নিচ্ছে ১৭ শতাংশ। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম ঢাকাকে অনুসরণ করতে পারে।’ চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘বর্তমানে চসিক ৮৫১ কোটি টাকা নতুন কর ধার্য করেছে। এদিকে খরচও বেড়েছে। আমার সময়ে বেতন ছিল ৯ কোটি টাকা, এখন বেতন দিতে হচ্ছে ১৬ কোটি টাকা। এর সঙ্গে আছে বছরে দুটি বোনাসের প্রায় ২০ কোটি টাকা, একটি পি-এফের ১০ কোটি টাকা, ২টি গ্র্যাচুইটির ২০ কোটি টাকা, বছরে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে পাথর বাবদ খরচ প্রায় ১ কোটি টাকা, বিটুমিন ক্রয় করতে হয় প্রায় ৭০-৮০ লাখ টাকা, বিদ্যুৎ বিল আসে প্রায় ১ কোটি টাকা। এসব মিলে খরচ হয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। তাই আমি বলব না, আপনি ট্যাক্স প্রত্যাহার করুন। আমি বলব, সহনীয় পর্যায়ে আনতে। অর্থাৎ চসিকের সামগ্রিক খরচের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কর ধার্য করলে নগরবাসী উপকৃত হবে।’ প্রসঙ্গত, চসিক নতুন নিয়ম ভাড়ার ওপর কর নির্ধারণ করায় গৃহকর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এ নিয়ে নগরজুড়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। হচ্ছে মানববন্ধন, ওয়ার্ড অফিস ঘেরাও, বিক্ষোভ-মিছিলসহ নানা কর্মসূচি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর