সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

সাত তলার কার্নিশে আটকা কিশোরী, অতপর...

নিজস্ব প্রতিবেদক

মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য আট তলার ছাদ বেয়ে নামতে গিয়ে আটকা পড়ে গৃহকর্মী ১০ বছরের কিশোরী আসমা। একতলা নামার পরই নিচে তাকিয়ে ভয়ে আর নামতে পারে না সে। ভয়ে তখন চিত্কার করতে থাকে। পাশের ভবন থেকে ইফফাত হোসেন সরণী নামের এক শিক্ষার্থী এ ঘটনা দেখে পুলিশকে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার করেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রাজধানীর শ্যামলীর    রিং রোডের শ্যামলীবাগে। জানা গেছে, শ্যামলীবাগের একটি বাড়ির গৃহকর্মী আসমা নিজ গ্রামে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু ওর মা নিষেধ করে বলে দিয়েছিলেন, ‘আসবি না। ঢাকা থাকলে টাকা পাবি।’ এরপরও যেতে সে চায়। নিচে গেলে দারোয়ান আটকে দেবে ভেবে ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামতে যায়। একতলা নেমেও যায়, কিন্তু নিচে তাকিয়ে আর সাহস পাচ্ছিল না। ঘণ্টাখানেক এভাবেই আটকে থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে তাকে উদ্ধার করে। জানা গেছে, দুপুরে হঠাৎ করেই ইফফাত হোসেন সরণী নামের এক শিক্ষার্থী দেখেন, পাশের একটি ভবনের ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে এক কিশোরী নামছে। একটি ফ্লোর নামার পরই সে থেমে যায়। আশপাশে তাকায়, আর ভয়ে চিত্কার করতে থাকে। তখন সরণী ফোন করেন আদাবর থানায়। পুলিশ ফায়ার সার্ভিসকে জানায়। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ একই সময়ে এসে উপস্থিত হয়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কিশোরীকে উদ্ধার করেন।

 আদাবর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার হোসেন জানান, বেলা একটার দিকে তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রওনা হন। একই সময়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করার পর কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। কিশোরী জানায়, মায়ের কাছে যাওয়ার জন্যই সে ওই দুঃসাহসী উদ্যোগটি নেয়। পুলিশকে সে জানায়, সে যেখানে থাকত, তারা তার সঙ্গে সব সময়ই ভালো ব্যবহার করত, খাবার দিত এবং কোনো ধরনের খারাপ ব্যবহার করত না। এরপরও মায়ের কাছে যাওয়ার জন্যই সে পালাতে চেয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরীর বাড়ি বরিশালের হিজলায়।

দারিদ্র্যের কারণে কিশোরীকে তার মা সরকারি কর্মকর্তার বাড়িতে কাজে দিয়েছেন। কিন্তু কিশোরীটির সেখানে থাকতে ভালো লাগছিল না। মেয়ের মা সন্ধ্যার লঞ্চে ঢাকা রওনা হয়েছেন। আজ মায়ের কাছে কিশোরীকে হস্তান্তর করা হবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর