বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী বিএনপি-জাপাতে একক

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী বিএনপি-জাপাতে একক

লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনে প্রার্থী হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন অনেকেই। আসনটি কখনো দখলে ছিল আওয়ামী লীগের, কখনো জাতীয় পার্টির, আবার কখনো বিএনপির। এবার কে পাচ্ছেন এই আসন তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে ভোটারদের মাঝে। আগামী সংসদ নির্বাচনে এ আসন নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সবাই। এখানকার সম্ভাব্য প্রার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছেন নানামুখী কার্যক্রম। সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসন। এবার প্রার্থী প্রায় ৫/৬ জন।

জানা গেছে, এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থীর কথা শোনা গেলেও আওয়ামী লীগে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। জাপায়ও একক প্রার্থী হিসেবে জি এম কাদেরের নাম রয়েছে। যিনি সবার কাছে ‘পরিচ্ছন্ন’ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু আওয়ামী লীগ-জাপা জোট হলে কে প্রার্থী হবেন তা নির্ধারণ হবে দলীয় ফোরামে। মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আওয়ামী লীগের দুজনের নাম রয়েছে আলোচনায়। এদিকে এ আসনের এমপি আবু সালেহ মো. সাঈদ দুলাল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ কামারুজ্জামানের জামাতা। প্রথম দিকে এলাকায় কম সময় দিলেও নির্বাচন সামনে রেখে নড়েচড়ে বসেছেন এমপি সাঈদ। এলাকার নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। চাইছেন নির্বাচনের ভোটও। আবু সাঈদ ১৯৯৬ সালে প্রথম মনোনয়ন পেলেও সে সময় দলীয় কোন্দলের কারণে হেরে যান। ১৯৯৮ সাল থেকে অদ্যাবধি তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। সর্বশেষ নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়ে সংসদ সদস্যের বেতন তুলে হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বণ্টন করে দিচ্ছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সাল থেকে নেত্রী আমাকে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষ সংগঠকের কারণে মনোনয়ন দিয়ে আসছেন। আশা করি এবারও তিনি আমাকেই মনোনয়ন দেবেন।’ তবে দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের নাম, যিনি একাধারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনে জাপার মনোনয়ন পাচ্ছেন জাপার কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এর আগে এখান থেকে দুবার এমপি নির্বাচিত হন তিনি। এরশাদের ভাই ও দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের নির্বাচিত হয়ে প্রথমে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পরে বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। নেতা-কর্মীদের কাছে সব সময় জনপ্রিয় নেতা তিনি। সাধারণ মানুষের কাছে যেমন পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে পরিচিত, তেমনি নেতা-কর্মীদের সুখ-দুখে পাশেই থেকেছেন সব সময়। জি এম কাদেরকে এই আসনে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় সর্বস্তরের মানুষ। এক্ষেত্রে কারও কোনো দ্বি-মত নেই। এমনকি সুশীল সমাজের লোকজনও তাকে পছন্দ করেন। পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশজুড়েই তার সুনাম আছে। দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে এবারও তিনি এই আসন থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন। জাপার নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা এলাকার উন্নয়নে জি এম কাদেরকে প্রার্থী হিসেবে মনোয়ন দেওয়া উচিত। আমরা সব সময় তার কাছে যেতে পারব। অন্য কেউ প্রার্থী হলে তা পারব না। আর এলাকার উন্নয়নে এমন পরিচ্ছন্ন নেতাই প্রয়োজন রয়েছে। আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী একপ্রকার চূড়ান্ত। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কাছে বৈচিত্র্যময় আন্দোলন কর্মসূচির জন্য জনপ্রিয় অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, যাকে লালমনিরহাটের উন্নয়নের রূপকারও ভাবেন এখানকার জনগণ, তিনি একাধারে সাবেক উপমন্ত্রী, জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে লালমনিরহাট-৩ আসনে নির্বাচিত হয়ে পেয়েছিলেন উপমন্ত্রীর পদ।

রাজনৈতিক বাস্তবতার চাপে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে অনেক সময় সরাসরি আন্দোলন কর্মসূচির আয়োজন করতে না পারলেও ১৩টি সামাজিক আন্দোলনের মতো নানা কর্মসূচির আয়োজন করে তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন দলীয় লোকজনকে চাঙ্গা রাখতে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা মত থাকলেও জেলা বিএনপির ঐক্যের প্রতীক তিনিই। এ আসনে তিনিই দলটির একক প্রার্থী।

সর্বশেষ খবর