বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাখাইনে গিয়ে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত যা দেখলেন

প্রতিদিন ডেস্ক

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিবেশী পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি সরেজমিন দেখাতে গত মঙ্গলবার নিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমানও। খবর বিবিসি বাংলার।

সেই সফর সেরে ফেরার পর দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে রাষ্ট্রদূত জানান, রাখাইনে গিয়ে তিনি বাস্তুচ্যুত বহু  রোহিঙ্গার মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা দেখেছেন এবং তারা নিজেদের গ্রামে আর ফিরে যেতে চায় না বলেও তাদের জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, সেখানে যেভাবে ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে, তা ‘হঠাৎ করে ঘটেনি’ বলেই তার মনে হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশী আরও চারটি দেশ অর্থাৎ চীন, ভারত, থাইল্যান্ড এবং লাওসের রাষ্ট্রদূতদের রাখাইনের পরিস্থিতি দেখাতে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন মিয়ানমারের শীর্ষ মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা।

সরকারি সহযোগিতায় সম্পাদিত সেই সফর সেরে ফেরার পর সুফিউর রহমান বলছিলেন, ‘গোটা অঞ্চলে আমি মাইলের পর মাইল ধরে যে পোড়া বাড়িঘর দেখেছি, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এ জিনিস হঠাৎ করে হয়নি বলেই আমার মনে হয়েছে।’ সফরে তার সঙ্গী অন্য রাষ্ট্রদূতরাও একই রকম            ‘কাছাকাছি ভাবনা’র শরিক বলেও তিনি জানান। পাঁচ বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বৌদ্ধপ্রধান রাথিডং এলাকার একটি গ্রামে, যেখানে একটি বিচ্ছিন্ন গ্রামে কিছু মুসলিম রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। তারপর রাখাইনের সাগরপাড়ে বেশ কয়েকটি গ্রামও তারা আকাশপথে হেলিকপ্টারে চেপে ঘুরে দেখেন।

পরে তিন-চারটি জায়গায় তাদের গাড়িতে চাপিয়েও নিয়ে যাওয়া হয়। সব জায়গাতেই স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা হয়েছে সরকারি দোভাষীদের মাধ্যমেই। কথোপকথনের সময় সরকারি কর্মকর্তারাও সেখানে হাজির ছিলেন।

সুফিউর রহমান বলেন, ‘এই মানুষগুলোর চোখে-মুখে ছিল চরম নিরাপত্তাহীনতার ছাপ। তারা বলছিলেন তাদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা। নিজের গ্রাম থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এই মানুষেরা, তবে তার পরেও তারা যে সেখানে আর ফিরতে চান না, সে কথা আমাদের খোলাখুলিই বলেন।’ তবে সরকারি কর্মকর্তারা একটু আড়াল হতেই তাদের কথাবার্তা থেকে একটু অন্যরকম আভাসও পাওয়া যায়। বোঝা যায় সে কথাগুলো তারা সরকারের প্রতিনিধিদের সামনে বলতে সাহস পান না।”

সর্বশেষ খবর