গভীর রাতে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্প কারখানার বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধায় আমদানি করা কাভার্ড ভ্যান বোঝাই কাপড় আটক করেছে। এ কাপড় অবৈধভাবে কালোবাজারে বিক্রি করা হচ্ছিল।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, গতকাল রাত ২টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দার টহল দল পুরান ঢাকার সিএমএম কোর্ট এলাকার জনসন রোড থেকে পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠান মাসটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাভার্ড ভ্যান (চট্টমেট্রো- ট ১১-৭১২০) ভর্তি বন্ডেড কাপড় আটক করে। আটক কাপড়ের বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ওই গাড়িতে পাওয়া কাগজপত্রে উল্লিখিত তথ্যনুযায়ী, মাসটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের বন্ডেড প্রতিষ্ঠানটি গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের বিল অব অ্যান্ট্রি নং-১২৮৫৪৩৮ এর মাধ্যমে ৮২৪ প্যাকেজ পলিয়েস্টার ফেব্রিক্স শুল্কমুক্ত (আইএম ৭) সুবিধায় আমদানি করে। পরে কাপড়গুলো ৩টি কাভার্ড ভ্যানের মাধ্যমে টঙ্গীর ফ্যাক্টরিতে নিয়ে আসার জন্য বোঝাই করা হয়। কিন্তু গভীর রাতে মাসটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্দেশে গাড়িগুলো কারখানার টঙ্গীর ঠিকানায় বাইপাস বরাবর না গিয়ে কাঁচপুর সেতু পার হয়ে ঢাকার ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময়ে গাড়ি চালকদের রাজধানীর ইসলামপুরের দিকে যেতে বলা হয়। গাড়ি চালক পণ্য পরিবহনের চালান (নম্বর-৬৩৫ তাং- ১৪/১০/২০১৭ খ্রি.) শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে সরবরাহ করেন। তবে শুল্ক গোয়েন্দার উপস্থিতি টের পেয়ে বাকি দুটি গাড়ি দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে আটক হওয়া গাড়িটি রাতেই সেগুন বাগিচার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয়ে আনা হয়। সূত্র জানিয়েছে, গত ২১ জুনেও শুল্ক গোয়েন্দারা ঢাকার তুরাগের এই প্রতিষ্ঠানটির বন্ডের কাপড় বোঝাই চারটি গাড়ি আটক করেছিল। তখন জরিমানাসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছিল। এই ঘটনার মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে আবারও একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি করল এই গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানটি। প্রসঙ্গত, মাসটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে ১২৫ কোটি টাকার বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের অপর একটি অভিযোগের তদন্ত শুল্ক গোয়েন্দার দফতরে চলমান রয়েছে। মূলত বিদেশে পণ্য রপ্তানি উৎসাহিত করতে রপ্তানিতব্য পণ্যের কাঁচামাল শুল্কমুক্তভাবে আমদানির জন্য ‘বন্ডিং সুবিধা’ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে আমদানি করা ওই কাঁচামাল দিয়ে পণ্য প্রস্তুত করে পুনরায় বিদেশে রপ্তানি না করে মাসটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড অধিক মুনাফার লোভে সেগুলো অবৈধভাবে খোলাবাজারে বিক্রয় করছিল।