কুমিল্লায় একটি অরক্ষিত রেলগেটে মাইক্রোবাস বিকল হলে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের আরোহী একটি বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানির তিন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল রুটে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর শ্রীনিবাস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল। নিহতরা হচ্ছেন— সেন্ট্রি সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মী জেলার সদর উপজেলার ঝাড়মণ্ডল গ্রামের মনসুর আলীর ছেলে আবু তাহের (৫০), সিকিউরিটি সার্ভিসের কুমিল্লা এরিয়া সুপারভাইজার ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ঠাকুরিয়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে আবদুর রশিদ (৪২) এবং মাইক্রোবাসের চালক কুমিল্লা সদর উপজেলার ধনপুর গ্রামের শামীম মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া (৩০)। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী আন্তনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর শ্রীনিবাস রেলগেটে আসার আগেই সেন্ট্রি সিকিউরিটি সার্ভিসেস লি. এর একটি মাইক্রোবাস রেলগেট অতিক্রমকালে রেললাইনের ওপর হঠাৎ বিকল হয়ে যায়। এ সময় দ্রুতগামী ট্রেনটি মাইক্রোবাসটিকে দুমড়ে-মুচড়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে শিকারপুর এলাকায় নিয়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে থানা ও জিআরপি পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় রেললাইন থেকে দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটি সরিয়ে নিলে ট্রেনটি দুপুর ১টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসে থাকা ওই সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মী আবু তাহের ঘটনাস্থলে নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান ওই সিকিউরিটি সার্ভিসের কুমিল্লা এরিয়া সুপারভাইজার আবদুর রশিদ এবং মাইক্রোবাসের চালক সোহেল মিয়া। বিকালে লাকসাম জিআরপি থানার ওসি স্বপন কান্তি বড়ুয়া জানান, কুমিল্লা থেকে ওই সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মীরা একটি ব্যাংকের টাকা আনতে চাঁদপুরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সড়ক খারাপ থাকায় বিকল্প পথে বিজয়পুর-বরুড়া সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে ওই রেল গেটটি ছিল অরক্ষিত। তাই মাইক্রোবাস চালকের অসর্তকতার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে, দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাস থেকে সিকিউরিটি কোম্পানির একটি বন্দুক ও ৪ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় লাকসাম জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে।
