বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
হঠাৎ বেড়েছে সামাজিক অস্থিরতা

উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ, স্বামী স্ত্রীকে কোপাল বখাটেরা

আত্মহত্যার চিরকুট শিলার

সাভার প্রতিনিধি

উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ, স্বামী স্ত্রীকে কোপাল বখাটেরা

শিলা

উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় সাভারে স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করেছে বখাটেরা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে সাভারের সিরামিক্স বাজার এলাকায়। এলাকাবাসী জানান, গত কয়েক দিন ধরে সাভার দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির সদস্য কবির হোসেনের    স্ত্রী মৌসুমী আক্তার ময়নাকে (৩৪) উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন সিরামিক্স এলাকার আহসান উল্লাহ। এর প্রতিবাদ করায় মঙ্গলবার রাতে সিরামিক্স বাজার এলাকায় কবির হোসেন ও তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার ময়নাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন বখাটে আহসান উল্লাহ ও তার সহযোগীরা।   আত্মহত্যার আগে শিলার চিরকুট : এদিকে সাভারেই বখাটেদের উৎপাতে চরম আত্মাভিমানে একটি চিরকুট লিখে বৃহস্পতিবার রাতে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় শিলা। প্রতিবাদ করতে না পেরে নিজেকেই হত্যা করে সে।  মৃত্যুর আগে জানিয়ে যায় কারা তার এ মৃত্যুর জন্য দায়ী। মেয়ের লিখে যাওয়া চিরকুটের ওপর ভিত্তি করে নিহতের বাবা সোমবার রাতে জাফর ও খোকন নামে দুজনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। মৃত্যুর আগে শিলা চিরকুটে লিখে যান— ‘যা করিনি তার জন্য কেন দোষী হতে হবে? তার থেকে মরে যাওয়া ভালো। আমার জন্য মা-বাবার সম্মানহানি হোক সেটা আমি চাই না। আমার মৃত্যুর জন্য জাফর, খোকন দায়ী। ইতি— হতভাগী শিলা।’

শিলা ঢাকার আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউপির পশ্চিম কলেশ্বরী এলাকার মো. আওলাদ হোসেনের মেয়ে। সে শিমুলিয়া শ্যামা প্রসাদ (এসপি) হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। জানা গেছে, স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয় শিলা। দীর্ঘ সময় তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তার বাবা আওলাদ হোসেন ঘরের দরজায় ধাক্কা দেন। এ সময় ভিতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখেন।

পরে ঘরে ঢুকে টেবিলে চিরকুট পান। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক ব্যক্তি জানান, চিরকুটে লেখা— ‘জাফর’ শিলার বড় ভাইয়ের বন্ধু। শিলার স্বজন সালমান চৌধুরী আফসোস করে বলেন, সৌন্দর্যই শেষ পর্যন্ত শিলার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। ছোটবেলা থেকেই ওকে আমরা সব সময় আগলে রেখেছি। খুবই আত্মাভিমানী মেয়ে ছিল। সুন্দর হওয়ায় অনেক ছেলেপেলেই পেছনে ঘুরত। কিন্তু শিলার স্বপ্ন ছিল অনেক বড় হবে। তাই এসবে কখনো পাত্তা দেয়নি। স্কুল শেষ করেই বাড়ি ফিরে আসত। কিন্তু বখাটেরা শিলাকে বাঁচতে দিল না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর